পুরাকীর্তি ভ্রমণ : রাউতমনি | Archaeological Excursion to Routmoni

পুরাকীর্তি ভ্রমণ : রাউতমনি

Archaeological Excursion to Routmoni

সুতনু ঘোষ।


খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত একটি জনপদ রাউতমনি। খড়্গপুর রেল জংশন থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার মতো দূরত্ব। খড়্গপুর ২ ব্লকের এই গ্রামে প্রায় চারশ পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। খড়্গপুরের কাছে বারবেটিয়া - জামনা রোড হয়ে রাউতমণি রাউতানচন্ডী হাইস্কুলের কাছে এলাম। এমনিতে বৃষ্টি হচ্ছিল কয়েকদিন ধরে। কিন্ত ঐদিন আকাশে মেঘ কম ছিল। রৌদ্রজ্জ্বল বেশ স্নিগ্ধ পরিবেশ ছিল। হাইস্কুলের পাশ দিয়ে রাস্তাটি পুরাকীর্তিগুলি ছুঁয়ে গিয়েছে। সেসব পুরাকীর্তি দেখতেই তো আসা। সুতরাং , হাইস্কুলের গেট থেকে এগিয়ে চলা। গাছগাছালি , পুকুর , ধানের ক্ষেত , কাচা পাকা বাড়ি। গ্রাম বাংলার দৃশ্য যেমন হয় আর কি। তবুও প্রতিটি স্থান তার নিজস্ব সৌন্দর্য্য, ইতিহাস, রহস্য নিয়ে বজায় থাকে। প্রতিটি বাঁক নিজের গল্প বলতে চায়।


Archaeological Excursion to Routmoni
কপালেশ্বরী নদীখাত (ছবি - সুতনু ঘোষ)

১) কপালেশ্বরী নদী - কপালেশ্বরী নদী হল কেলেঘাইয়ের একটি উপনদী। এটির অপর একটি নাম কপালশৈলী। প্রাকৃতিক, বিশেষ করে বর্ষার জলে পুষ্ট একটি নালা বা খাল। কপালেশ্বরী নদী খড়্গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত মাওয়া ( Mawa ) গ্রাম থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। কয়েকটি ছোট জলধারায় পুষ্ট হয়ে সবং এর জগন্নাথ চকে এসে কপালেশ্বরী নদী কেলেঘাই এর সাথে মিশেছে। কপালেশ্বরী ও কেলেঘাই নদীর মিলনস্থলে শালমারির জলা নামে একটি জলাভূমির সৃষ্টি হয়েছে।



মাওয়া গ্রাম থেকে আসা ধারাটি দক্ষিণ পূর্বে কিছুটা প্রবাহিত হয়ে এসে পড়েছে রাউতমনির ঢিবির পাশে।

এককালে এই কপালেশ্বরী নদী বইত রাউতমনির ওপর দিয়ে। তার মজা খাত আজও দেখা যায়। মাওয়া-রাউতমনি হয়ে এই ধারাটি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়নি। বৃষ্টির সময় এই খাত জলে ভরে ওঠে। সক্রিয় হয়ে ওঠে কপালেশ্বরী। খাতের রেখা ধরে জলধারা বয়ে চলে কেলেঘাইয়ের দিকে। বৃষ্টির পরে কেলেঘাই, কপালেশ্বরী ও বাঘুই নদীর বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে মেদিনীপুরের একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল। Anicut Dam এর কাছে কংসাবতী নদীর সাথে সংযুক্ত মেদিনীপুর ক্যানেল ও কপালেশ্বরী যুক্ত করার ফলে উপনদীটি বর্তমানে শুধুমাত্র বর্ষার জলে পুষ্ট এমন বলা যাবে না।


Archaeological Excursion to Routmoni
কপালেশ্বরী নদীখাত (ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
রাউতমনির পথে (ছবি - সুতনু ঘোষ)

এই নদীটির ধারে অনেক পুরাকীর্তি বর্তমান। রাউতমনির কাছে গোকুলপুরে এই কপালেশ্বরী নদীর ধারে চন্দ্রশেখর ঘোষ একটি কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মন্দিরটি একসময়ে নদীগর্ভে চলে গিয়েছিল। পরে নতুন একটি কালী মন্দির তৈরী করা হয় এখানে।


Archaeological Excursion to Routmoni
রাউতানচন্ডী মন্দির (ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
দেবী রাউতানচন্ডী (ছবি - সুতনু ঘোষ)

রাউতমনির ঢিবির একপাশে কপালেশ্বরী নদীর খাত। শুকনো আগাছা ঝোপ আবৃত খালের আকারে একটি নদীর চিহ্ন। বৃষ্টির সময়ে জল ভরে যায়। বাকি সময় শুকনো। অন্যপাশে নদীর প্রবাহ চিহ্ন মিলিয়ে গেছে চাষের ক্ষেতে।


Archaeological Excursion to Routmoni
রাউতানচন্ডী মন্দির এলাকা(ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
পঞ্চরত্ন রাউতমনি(ছবি - সুতনু ঘোষ)

২) রাউতানচন্ডী মন্দির- রাউতমনির মজা কপালেশ্বরী নদীর পাশে একটি ঢিবি আছে। রাউতমনির প্রধান পিচের রাস্তাটি হাইস্কুল, মহাপাত্রদের পুরাকীর্তিগুলি ছাড়িয়ে একটি ঢিবির ওপর উঠেছে। ঢিবির ওপর রাউতানচন্ডী মন্দির পাশে রেখে রাস্তা নীচে নেমেছে। কপালেশ্বরীর নদীখাত পেরিয়ে সেই রাস্তা উন্মুক্ত প্রান্তর ও ঘরবাড়ি পেরিয়ে মিলিয়ে গেছে গাছপালার আড়ালে। রাউতমনির ঢিবির ওপর রাউতানচন্ডী মন্দির ও ঢালের নীচের দিকে একটি পুকুর। এমনিতে রাউতমনিতে ছোট বড় পুকুর আছে কয়েকটি। ঢিবির ওপরেও একটি পুকুর আছে। জায়গাটি ছোটবড় গাছগাছালিতে পূর্ণ।


Archaeological Excursion to Routmoni
উত্তর(ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
দক্ষিণ (ছবি - সুতনু ঘোষ)

ঢিবির ওপর রাউতানচন্ডী মন্দিরটি পুর্বমুখী , সাম্প্রতিক অতীতের দালান রীতির নির্মাণ। গর্ভগৃহে মা রাউতানচন্ডীর মাকড়া পাথরের মূর্তি। তার ত্রিনয়নে অপূর্ব দিব্যভাব। পাশে আরও একটি সিঁদুর লিপ্ত মূর্তি আছে। তন্ত্রমতেই দেবীর পুজো সম্পন্ন হয়। সাপ্তাহিক মঙ্গলবার ও শনিবার মানুষের ভিড় বেশি হয়। চৈত্রমাসের প্রথম শনিবার এখানকার বাৎসরিক উৎসব। এখানে একটি বলিকাঠ আছে এবং বলিপ্রথা চালু আছে। এককালে রাউতমনির ঢিবির ওপর একটি কুচলা গাছের তলে দেবী রাউতানচন্ডীর পুজো হত। ভূতনাথ ভট্টের পুত্র তিতারাম ভট্ট স্থানীয়দের সহযোগিতায় পাকা মন্দিরের স্থাপনা করেন। তবে বর্তমানে মন্দিরটি আরও ভালোভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তিতারামের পুত্র চন্দ্রকান্ত , নবকান্ত , লক্ষীকান্ত প্রমুখ বর্তমানের সেবাইতগণ পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন। মন্দিরের মার্বেল ফলকে মন্দির স্থাপনা বলা হয়েছে - বাং ১৩৫১ সন, অর্থাৎ ইং ১৯৪৪ সাল।


Archaeological Excursion to Routmoni
মাঝ (ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
রাসমঞ্চ (ছবি - সুতনু ঘোষ)

মন্দিরের একপাশে পাথরের একটি ভাঙা অংশ পড়ে রয়েছে। তাতে দুটি পাশাপাশি মূর্তি খোদাই আছে দেখা যায়। এছাড়া একাধিক পাথরের আমলক ও মূর্তি, মৃৎপাত্রের ভাঙা টুকরো প্রভৃতি ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এগুলো প্রাচীন কোনও মন্দিরের অংশ। রাউতানচন্ডী মন্দিরের সামনে বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে বসে। প্রসাদী মিষ্টি, ফুল, পুজোর নানা সামগ্রী থাকে। মিষ্টির দোকান, ছোট বাজার আছে ঢিবির ঢালে। কেউ বসে কিছু খাবার নিয়ে, নিত্য ব্যবহার সামগ্রি বিক্রির জন্য। আকাশে মেঘ কম ছিল। তবে ঢিবির ওপর থাকাকালীন কয়েক মিনিটের বৃষ্টি হয়ে গেল। তারপর রোদ উঠলে , অন্যান্য পুরাকীর্তির দর্শনে ঢিবির ঢাল বেয়ে নেমে এলাম। রাউতমনিতে মহাপাত্র পরিবারের জমিদারি গড়ে উঠেছিল। এই পরিবারের রাধেশ্যাম মহাপাত্র নামক জনৈক জমিদারের কথা জানা যায়।


Archaeological Excursion to Routmoni
দ্বারপাল(ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
দ্বারপাল (ছবি - সুতনু ঘোষ)

৩) পঞ্চরত্ন রাধাগোবিন্দ মন্দির - এককালের রাউতমনির মহাপাত্র পরিবারের ইঁটের পঞ্চরত্ন মন্দিরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সামনের দিকে পুকুর, পাশে ঝোপজঙ্গল , বাঁশঝাড়। প্রায় তিরিশ ফুট উচ্চতার পূর্বমুখী মন্দির। মন্দিরের সামনের ত্রিখিলান স্তম্ভ দুটি সম্পূর্ণ ভাঙা। গর্ভগৃহের প্রবেশদ্বারটি কাঠের ছিল, তার পাল্লাগুলো নেই। তার পাশে স্তম্ভের ব্যবহার , ভিনিশীয় ভাস্কর্য, নকশা, কুলুঙ্গি দেখা যায়। মন্দিরের রত্নগুলি দেউলের আকারের নির্মিত। পাঁচটি রত্নের শীর্ষভাগ পীঢ়া রীতির। কেন্দ্রীয় রত্নে - পঞ্চরথ ও অন্যান্য চারটি রত্নে - ত্রিরথ বিভাজন দেখা যায়। প্রতিষ্ঠাফলক চোখে পড়ে না। সামনের দেওয়ালের সারিবদ্ধ কুলুঙ্গিগুলোতে টেরাকোটার কোনও প্রয়োগ নেই। তবে ত্রিখিলানের নকশা করা ইঁটের ওপর কিছু লেখা দেখতে পাওয়া যায়। ক্রমিক সংখ্যা ও দিক নির্দেশের চিহ্ন এগুলো। মন্দির নির্মাতারা এগুলির ব্যবহার করতেন কাজ নিখুঁত হওয়ার জন্য। আগে থেকেই প্রতিটি ইঁটের টুকরো পরিকল্পনা অনুসারে বানানো হত। তাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকত না। টেরাকোটার ক্ষেত্রেও এমনই সংখ্যার ব্যবহার করত শিল্পীরা। রাউতমনির রাধাগোবিন্দ মন্দিরের তিনটি খিলানের উত্তর থেকে দক্ষিণে সংখ্যার প্রয়োগ আছে। একটি খিলানে , 'উত্তর ১' থেকে শুরু করে 'উত্তর ১০' পর্যন্ত লেখা আছে। মধ্যখিলানে লেখা আছে- 'মাঝ' ১ থেকে ১৪ পর্যন্ত। তৃতীয় খিলানে লেখা - 'দক্ষিণ' ১ থেকে ১০ পর্যন্ত। উত্তর, মাঝ, দক্ষিণ কথাটির বেশ কয়েকবার প্রয়োগ আছে। এই লেখাগুলি পুরাকীর্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এইধরণের লেখা সচরাচর চোখে পড়ে না। সেইদিক থেকে পুরাকীর্তিটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তবে যেভাবে জীর্ণ হয়েছে মন্দিরটি , সংস্কার না করা হলে ভেঙে পড়বে এককালে।


Archaeological Excursion to Routmoni
রাউতমনি(ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
জোড়া আটচালা শিব মন্দির রাউতমনি (ছবি - সুতনু ঘোষ)

৪) নবরত্ন রাসমঞ্চ - মঞ্চ রীতির একটি স্থাপত্য রাসমঞ্চ। রাউতমনির রাস্তার পাশেই রাসমঞ্চ ও জোড়া আটচালা মন্দির দেখা যায়। আটকোণা নবরত্ন রীতির রাসমঞ্চ। রত্নগুলি প্রতিটি বেহারী রসুনচুড়া রীতির নির্মিত। মেদিনীপুর জেলায় এই রীতির রাসমঞ্চ অনেক তৈরী হয়েছে। রাউতমনির এই রাসমঞ্চের ওপর সাদা রং এর প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। দ্বারপথগুলির ওপরে পঙ্খ পলেস্তরার কারুকাজ করা হয়েছে। ফুলপাতার সাধারণ নকাশি কাজ। অনেক টেরাকোটার ফলক আছে রাসমঞ্চের গায়ে। আটকোণা ভিত্তিবেদির নীচে সামনের দিকের কোণগুলিতে টেরাকোটার দ্বারপালের মূর্তি আছে। এই প্রহরীদের অধিকাংশের মুখ, মাথা, হাত ,পা ভাঙা। সারিবদ্ধ টেরাকোটার কাজে আছে বিষ্ণুর দশাবতার ফলক। মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, দাশরথী রাম, বলরাম, জগন্নাথ, কল্কি অবতার। এছাড়া কৃষ্ণ , বংশীবাদক কৃষ্ণ, যশোদা ও কৃষ্ণ, গরুড়, বিভিন্ন যোগী মূর্তি, ঢোলকবাদক, সৈন্য বা যোদ্ধা, চামর ও ছত্রধারী, বিভিন্ন নারী ও পুরুষ মূর্তি দেখা যায়। এছাড়া বরাহী , মাহেশ্বরী, ব্রহ্মাণী দেবীর মূর্তি আছে। এরকম বিবিধ বিষয়ক টেরাকোটা সজ্জিত রাসমঞ্চ এটি।


Archaeological Excursion to Routmoni
শিব, উত্তর (ছবি - সুতনু ঘোষ)


Archaeological Excursion to Routmoni
শিব মন্দির (ছবি - সুতনু ঘোষ)

৫) জোড়া শিব মন্দির - মহাপাত্র পরিবারের পুরাকীর্তি এটি। প্রসেনজিৎ দাসের বাড়ির সামনে রাসমঞ্চ ও শিবমন্দির দুটির অবস্থান। পাশাপাশি দুটি আটচালা শৈলীর পশ্চিমমুখী শিবের মন্দির। বর্তমান পুরোহিত আছেন প্রণব ভট্ট । মন্দিরে প্রতিদিন পুজো হয়। শিব চতুর্দশীর সময় উৎসব হয়। এই দুটি শিব মন্দিরের ভিত্তিবেদি উঁচু, প্রতিষ্ঠালিপি চোখে পড়ে না। দক্ষিণদিকের মন্দিরটি গাছপালা পরিষ্কার করে সংস্কার করা হয়েছে। উত্তর দিকের মন্দিরটির কার্নিশের ওপরে ছাদের পলেস্তরা উঠে গিয়ে সরু ইটের পাঁজর বেরিয়ে পড়েছে। তার ওপর বট, ডুমুর জাতীয় অনেক গাছপালা গজাতে শুরু করেছে। দুটি মন্দিরেই শিবলিঙ্গ আছে। দক্ষিণদিকের মন্দিরের শিবলিঙ্গ ভূমির কিছু নীচে আছে। উত্তর দিকের মন্দিরটির প্রবেশদ্বারের দুপাশে দ্বারপাল ও মন্দিরের গায়ে দুএকটি ভাস্কর্য দেখা যায়। অপরদিকে , দক্ষিণের মন্দিরের খিলানের নীচের দেওয়ালে দুটি নর বাঘ ও তলোয়ার হাতে এক রাজপুরুষের যুদ্ধ দেখানো হয়েছে। হিংস্র জন্তুর আক্রমণের মুহুর্তে খাপ থেকে তরোয়াল বের করছে সেই পুরুষমূর্তি। বীরত্বের প্রতীক এই ভাস্কর্য। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি উদ্ধার হওয়া মাকড়া পাথরের মূর্তি। চারকোণা পাথরের ওপরে খোদাই রয়েছে এই ভাস্কর্য। প্রাথমিকভাবে, সূর্যদেবের মূর্তি বলে মনে হয়। দন্ডায়মান মূর্তির দুহাতে দুটি পদ্ম ধরা এবং সাথে দুই সহচর দেখা যায়।


Archaeological Excursion to Routmoni
শিব, দক্ষিণ (ছবি - সুতনু ঘোষ)

রাউতমনি গ্রামে এগুলো ভালোভাবে ঘুরে দেখতেই কয়েক ঘন্টা কেটে গেল। রাউতমনি গ্রামের গ্রামদেবী রাউতানচন্ডী, ঢিবির পাশে কপালেশ্বরীর খাত, মহাপাত্রদের পুরাকীর্তি সমূহ দেখা শেষ হলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম। সাধারণত পুরাকীর্তি ভ্রমণের পর সেসব জায়গা তাড়াতাড়ি ছেড়ে আসতে ইচ্ছে হয়না। কিছু জায়গায় মন আটকা পড়ে থাকে। চোখের দেখা হয় তাৎক্ষণিক তবুও তার রেশ থাকে দীর্ঘকালীন।অনেক সময় পথের ক্লান্তি মেটায় কোনও গাছের ছায়া বা হালকা ঠান্ডা বাতাস। রাউতানচন্ডীর পুরোহিত নবকান্ত ভট্ট বলেছিলেন দেবীর কৃপা থাকলে আবার নাকি দেখা হবে। একপশলা বৃষ্টি এমনিতেই আগে হয়েছিল। আবার একদিন আসা যেতে পারে এইভেবে রাউতমনি ছেড়ে খড়্গপুর শহরের ফেরার রাস্তা ধরলাম।।


midnapore.in

(Published on 26.02.2023)

পুরাকীর্তি ভ্রমণ ও সমীক্ষা - ৯ জুলাই ২০২২
লেখা ও ছবি - সুতনু ঘোষ