রাকেশ সিংহ দেব।
Home » Medinikatha Journal » Rakesh Singha Dev » Nightjar | Caprimulgus asiaticus
রাতের বেলায় এ পাখি ডেকে ডেকে চরে বেড়ায়, পোকা খায় এবং নিজেদের মধ্যে ভাববিনিময় করে বলে এ পাখির নামা রাতচরা। রাতচরা’রা গ্রাম বাংলার এক অদ্ভুত পাখি। নাম থেকেই বোঝা যায় রাতের সাথে এই পাখিটির সম্পর্ক খুব নিবিড়। দিনের আলো নিভে এলেই সারাদিন ঢুলু ঢুলু চোখে নিশ্চুপ বসে থাকা এই পাখির ডানা মেলার সময়। প্রকৃতিতে অন্ধকার নেমে এলেই শুরু হয় এদের কর্মতৎপরতা। যেন সন্ধ্যার আকাশ ‘রাতচরা’ পাখিকে আহ্বান জানায় ঘর ছেড়ে বের হওয়ার। এদের প্রধান খাবার ঝিঁঝি পোকা, ফড়িং, গুবরে পোকা ও অন্যান্য উড়ন্ত নিশাচর কীটপতঙ্গ। উড়তে উড়তেই এরা শিকার ধরে খায়। রাতচরাদের শারীরিক গড়ন একটু ব্যতিক্রমী। গায়ের পালকের বিন্যাস এবং রঙ অনেকটাই গাছের মরা ডাল বা শুকনো পাতার মতো। ধূসর শুকনো পাতার মাঝে চুপটি করে বসে থাকা অবস্থায় এদের খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব। পেঁচার সাথে কিছু সাদৃশ্যতা থাকার জন্য শুকনো পাতার উপরে বসে থাকতে পছন্দ করা রাতচরাদের জঙ্গলমলের বেশ কিছু জায়গায় 'পাতপেঁচা' বলে। গ্রাম-গঞ্জের হালকা ঝোপজঙ্গল, শুকনো ঘাস জমি কিংবা বাঁশবনে রাতচরাদের অবাধ বিচরণ। অনেক সময় সন্ধ্যার মুখে এদের নির্জন রাস্তার উপরে বসে থাকতে দেখা যায়।
আমাদের অবিভক্ত মেদিনীপুরে চার ধরনের রাতচরা পাখি দেখতে পাওয়া যায়।এরা আমাদের এলাকার আবাসিক বাসিন্দা। গ্রামগঞ্জের ছোটখাট ঝোপঝাড় কিংবা বাঁশবনে এদের বিচরণ বেশি। রাতচরা লম্বায় ২৫-৩৩ সেন্টিমিটার। গায়ের উপরের রঙ হলদেটে-ধূসর মিশ্রিত, কালো ছিট। ঘাড়ের পাশে লালচে কালো ছাইরঙা ছোপ। চোখের পাশ থেকে চিবুক পর্যন্ত রয়েছে অল্পক’টি খাড়া লোম। লেজ ও ডানা বেশ কিছুটা লম্বা। বুক থেকে পেট পর্যন্ত আড়াআড়ি ডোরা দাগ। গলায় হালকা সাদা বন্ধনী। লেজের তলার পালক ফিকে রঙের। পা লালচে-বেগুনি। স্ত্রী পাখির লেজের প্রান্তে থাকে হলদে-লালের মিশ্রণ যা দেখে এদের পার্থক্য করা যায়। পায়রার থেকে একটু ছোট বা বড় হয় আকারে। রাতের উড্ডীয়মান কীটপতঙ্গ এর খাদ্য। বাঁশবন বা ঝোপঝাড়েও দেখতে পাওয়া যায়। মাটিতে বা মাটির কাছাকাছি গাছের ডালে এমনভাবে বসে থাকে যে বাদামী রঙের শুকনো পাতার জন্য চট করে লক্ষ্য করা যায়না। অন্যান্য রাতচরাদের মতো নিশাচর ও রাতে শিকার করে। ডাকার সময় তীব্র ধাতব আওয়াজ "চানক, চানক, চানক" বা "টক, টক, টক" করে ডাকে। মার্চ থেকে মে মাস এদের প্রজনন ঋতু। বাসা বানায় না। খোলা মাটিতে দুটো হালকা গোলাপি রঙের লালচে বাদামী ছিটওয়ালা ডিম দেয়।
এরা আমাদের এলাকার পরিযায়ী বাসিন্দা। তুলনামূলক পাথুরে এবং তৃণময় সমভূমি এলাকায় দেখা মেলে। দৈর্ঘ্য ২০-২৬ সেন্টিমিটার। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ের গায়ের উপরের রং বাদামি-দারুচিনি মিশ্রিত ছিট এবং কালচে ডোরাকাঁটা। ঠোঁটের গোড়ায় অল্পসল্প খাড়া লোম। লেজ ও ডানা সামান্য লম্বা। বুক থেকে পেট পর্যন্ত রয়েছে আড়াআড়ি ডোরা দাগ। লেজ তলার পালকে বাদামি-সাদার ছিট। চোখ বাদামি। ঠোঁট কালচে, ওপরের ঠোঁট বড়শির মতো বাঁকানো। পা কালচে। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে প্রায় অভিন্ন। পুরুষের লেজের বাইরের পালক সাদা ও ডানায় সাদা পট্টি রয়েছে। অন্যদিকে স্ত্রীর পুরো লেজ ধূসর-বাদামি, ডানায় হলুদ পট্টি আছে। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে বাদামি। পা, পায়ের পাতা ও আঙুল ফ্যাকাশে।
এরা একাকী বা জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করে। নিশাচর ও সান্ধ্যচারী রাতচরা দিনের বেলা মাটিতে ঝরা পাতার ওপর বসে থাকে। উড়ন্ত পোকামাকড়, মথ ও গুবরে পোকা খায়। ‘চিউইপ... চিউইপ...চিউইপ...’ স্বরে ডাকে। মার্চ থেকে আগস্ট রাতচরার প্রজননকাল। এরা কোনো বাসা বানায় না। শুকনো মাটিতে ঝরা পাতার ওপর ১ থেকে ২টি কালচে ছিট-ছোপসহ লালচে-বাদামি রঙের ডিম পাড়ে। স্ত্রী-পুরুষ পালাক্রমে ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৬ থেকে ২০ দিনে। ২৮ থেকে ৩৪ দিনে ছানা উড়তে শেখে। এদের আয়ুষ্কাল ৬ থেকে ৭ বছর।
এরা আমাদের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। গ্রামগঞ্জের জঙ্গলাকীর্ণ মেঠো রাস্তার ওপর, ছোটখাট ঝোপঝাড় কিংবা বাঁশবনে এদের বিচরণ বেশি। লম্বায় ২১-২৪ সেন্টিমিটার।গায়ের উপরের রঙ কালচে-বাদামি মিশ্রিত ছিট। চোখের পাশ থেকে চিবুক পর্যন্ত অল্পস্বল্প খাড়া লোম। লেজ ও ডানা সামান্য লম্বা। বুক থেকে পেট পর্যন্ত রয়েছে আড়াআড়ি ডোরা দাগ। গলায় হালকা ক্রিম সাদা বন্ধনী। লেজের তলার পালক ফিকে রঙের। পা কালচে। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম মনে হলেও সামান্য পার্থক্য রয়েছে। সূর্যাস্তের খানিকটা পরেই ঝোপজঙ্গলের ভিতর থেকে ডাকতে শুরু করে ‘চউঙ্ক-চউঙ্ক-চউঙ্ক’ সুরে। প্রজনন মরসুম ছাড়া বেশির ভাগ সময় একা একা বিচরণ করে। প্রজনন মরসুম মোটামুটি ভাবে এপ্রিল থেকে অগাস্ট। তবে অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। এসময় এরা সরাসরি মাটির উপরে শুকনো পাতা জড়ো করে বাসা বাঁধে এবং তার উপরে দুইটি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৬-১৮দিন। স্ত্রী এবং পুরুষ রাতচরা পাখি দেখতে প্রায় অভিন্ন। সারাদিন তারা মাটিতেই থাকে। মাটিতেই ঘুমায়। প্রজনন সময়ে মাটিতেই শুকনো ঘাস পাতার উপরে ডিম পেড়ে ডিমে তা দিয়ে ছানা ফোটায়। ছেলে পাখিটি খাবার এনে তা দিতে বসা মেয়ে পাখিকে খাওয়ায়। আবার মাঝে মাঝে ছেলে পাখিটিও ডিমে তা দেয়। এভাবেই আগন্তুক নতুন প্রজন্মটিকে টিকিয়ে রাখার অদেখা যুদ্ধ চলে।
জার্ডনের রাতচরা হল একটি মাঝারি আকারের রাতচরা পাখি। আগে এদের লম্বা-লেজযুক্ত রাতচরা বা ল্যাঞ্জা রাতচরার একটি উপ-প্রজাতি হিসাবে দেখা হত। পরবর্তীতে এরা এদের স্বতন্ত্র ডাক বা কল দ্বারা নিজেদের স্বতন্ত্র প্রজাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সাধারণ নামটি শল্যচিকিৎসক-প্রকৃতিবিদ ডঃ টমাস সি. জার্ডনকে স্মরণ করে দেওয়া, যিনি সর্বপ্রথম প্রজাতিটির বর্ণনা করেছিলেন। অন্যান্য রাতচরাদের মতো এরাও নিশাচর পাখি। সূর্যাস্তের পরে নীরব উড়ানে উড়ে বেড়ায়। উড়বার সময় দূর থেকে এদের বড় আকারের মথের মতো দেখায়। দিনের বেলায়, জার্ডনের নাইটজার মাটিতে নীরব ভাবে বসে থাকে, তখন মাটির সাথে মিশে থাকার জন্য এদের সনাক্ত করা কঠিন।
এরা প্রায় ২৬ সেমি মতো লম্বা হয়। এদের মাথা ভারতীয় নাইটজারদের চেয়ে বড় হয়। ইন্ডিয়ান নাইটজারদের সাথে এদের প্রধান পার্থক্যগুলো হলো, এদের বাদামি ছিটেযুক্ত ছোট লেজ, মাথায় লালচে ক্রাউনের দাগ, আর ডানায় সাদা বার আকৃতির দাগ। এদের গলার কলার কালচে রঙের হয়। নিশাচর পোকামাকড়, যেমন মথ এদের প্রধান খাদ্য। রাতচরাদের এই প্রজাতিটি খুব কমই রাতের বেলা রাস্তার উপরে বসে বিশ্রাম নেয়। এরা গাছের ডালে বা ঝোপের উপরে উঠে বসতে বিশেষ পছন্দ করে। যদিও এটি গাছ থেকে ডাকলেও এরা মাটিতেই বসবাস করে। এদের প্রজনন ঋতু মার্চ থেকে জুলাই। এরা বাসা তৈরি করে না। খালি মাটিতে শুকনো ঝরাপাতার উপরে দুটি মার্বেলর মতো ডিম দেয়। এদের ছদ্মবেশী পালক সজ্জা বা প্লামেজ দিয়ে বুকের নীচে ডিমগুলি ঘনিষ্ঠভাবে ঢেকে রাখে, এটিই এদের সর্বোত্তম সুরক্ষা। ছানাগুলি ডিম ফোটার পরেই হামাগুড়ি দিতে পারে এবং আতঙ্কিত হলে পাতার মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। এর সাধারণ কলটি দ্রুত পুনরাবৃত্তিমূলক ভাবে ''চ-উ-উ''। আরেকটি ডাক ব্যাঙের মতো "ক্রোক-ক্রোক"।
অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুর সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই পাখিটি দেখতে পাওয়ার বা ফটোগ্রাফির খুবই কম রেকর্ড রয়েছে। ইতিমধ্যে শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় এই রাতচারা পাখিটি পাওয়া যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। ২০১৯ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ভাদুতলা রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে জার্ডনের রাতচরার ফটোগ্রাফিক রেকর্ড নিতে সক্ষম হন মেদিনীপুর শহরের সায়নদীপ মাইতি ও পূর্ব মেদিনীপুরের অসীম গিরি। পরবর্তীতে তাদের পর্যবেক্ষণ "Indian Birds"-এ প্রকাশিত হয়।
জংলি রাতচরা একটি মাঝারি আকারের রাতচরা পাখি। এদের প্রধানত বনভূমির প্রান্তভাগে, পাথুরে পাহাড়ি তৃণভূমি ও ঝোপঝাড়ে গোধূলির আলো আঁধারিতে ডাকতে ও ওড়াওড়ি করতে দেখা যায়। এসময় এরা অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই রাতচরারা সাধারণত গাছে থাকে। গাছের লম্বা ডালের উপর লম্বভাবে বসে বিশ্রাম নেয়।এছাড়াও এরা পরিত্যক্ত ও ন্যাড়া খুঁটির উপর বিশেষ পছন্দ করে। এরা প্রায় ২১ সেমি থেকে ২৪ সেমি মতো লম্বা হয়। এদের গা ধূসর রঙের হয়। মাথার উপর লম্বালম্বি কালো দাগ থাকে। এদের লেজ ধূসর। লেজের ডগার উপরের দিকে কালো দাগ ও নীচের দিকে সাদা দাগ থাকে। পুরুষ পাখির গলায় একটা সাদা ছোপ থাকে যা মাঝখানে ছাড়া বা ভাঙা থাকে। স্ত্রী পাখির গলায় লালচে বাদামী ছোপ থাকে। নিশাচর পোকামাকড়, যেমন মথ এদের প্রধান খাদ্য। এদের প্রজনন ঋতু জানুয়ারি থেকে জুন। এরা বাসা তৈরি করে না। খালি মাটিতে শুকনো ঝরাপাতার উপরে দুটি মার্বেলর মতো ডিম দেয়।
অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুর সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই পাখিটি দেখতে পাওয়ার বা ফটোগ্রাফির খুবই কম রেকর্ড রয়েছে। ebird এর তথ্য অনুযায়ী এর আগে শুধুমাত্র পূর্ব বর্ধমান থেকে ভারতীয় জংলি রাতচরার উপস্থিতির তথ্য ছিল। গত ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ঝাড়গ্রাম জেলার কাঁকড়াঝোড় ফরেস্ট থেকে ভারতীয় জংলি রাতচরার কল ও ফটোগ্রাফিক রেকর্ড নিতে সক্ষম হন মেদিনীপুর শহরের রাকেশ সিংহ দেব (প্রতিবেদনের লেখক) সায়নদীপ মাইতি ও ঘাটালের প্রবীর পাত্র। ebird এর তথ্য অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের সাপেক্ষে পূর্ব বর্ধমানের পর এটিই ছিল ভারতীয় জংলি রাতচরার দ্বিতীয় রেকর্ড।
নানা কারণে দেশব্যাপী বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্রমশ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সরাসরি যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে দেশের মূল্যবান জীব-বৈচিত্র্যের উপর। এর ফলে নানা প্রজাতির পাখিসহ বন্যপ্রাণীরা আজ মারাত্মকভাবে বিপন্ন। আবাসস্থলের পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় কিছু কিছু পাখিদের টিকে থাকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। একসময় সুলভ দর্শন হলেও বর্তমানে এরা অসুলভ এবং বিপন্ন হয়ে উঠছে শুধুমাত্র আবাস সংকটের কারণে। গ্রামে আগের মতো ঝোপজঙ্গলও নেই, নেই বাঁশঝাড়ও ফলে এরা ভীষণ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
দিনের পর দিন মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে করে পোকামাকড় পুরোপুরিভাবেই শেষ করে ফেলেছি আমরা। ফলে পোকার ওপরই যাদের জীবন নির্ভর করতো তারা এখন বিলুপ্তির পথে। তাদের মধ্যে প্রথমেই আছে এই নিশাচর পাখি, রাতচরা। খাদ্যের পরেই রয়েছে প্রজনন সংকট। মাটিতে ডিম দিলেও অনেক সময় নানা কারণে ডিমটি টেকে না। কোনোক্রমে যদিও বা ডিমটি টেকে গিয়ে ছানা ফুটে তো অধিকাংশ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত ওই ছানাটি টেকে না। এমনি চরম অবস্থা এদের। বলতে দ্বিধা নেই, মাটিতে বসবাস করা পাখিদের অবস্থা আজ খুবই খারাপ। কারণ এখন প্রায় কোথাও নিরাপদ মাটি নেই। নিরাপদ মাটি মানে নির্জন অবস্থান বা যেখানে মানুষসহ অন্যান্য পশু-পাখির উপস্থিতি নেই। রাতচরারা একদম মাটির উপরে ডিম পেড়ে ছানা ফুটিয়ে আসছে। কিন্তু এখন আর পারছে না। আজ এমন নির্জন-র্নিঞ্ঝাট বনজঙ্গল কোথায়ও নেই। মার্চ থেকে মে মাসে রাতচরাদের প্রজনন মরসুমে জঙ্গলমহলের পর্ণমোচী বনের মাটিতে বা শুকনো ঘাসজমিতে যেভাবে আগুন লাগানোর দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে তা এদের মতো মাটিতে বসবাসকারী পাখিদের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। রাতের সময় রাতচরারা রাস্তার উপর বসে থাকতে পছন্দ করে। এইসময় যানবাহনের তীব্র আলো এদের চোখে পড়লে এরা সাময়িকভাবে অন্ধ হয়ে পড়ে এবং পালাতে না পেরে চাকার তলায় প্রাণ হারায়। এভাবেই বর্তমান সময়ে এদের জীবন অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে গেছে। রাতচরা পাখিদের মতো মূল্যবান প্রাণ-প্রকৃতির কথা ভেবে তাদের বাসস্থানের উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। নয়তো অদূর ভবিষ্যতে নীরবে মেদিনীপুরের তথা জঙ্গলমহলের বুক থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে রাতচরাদের বৈচিত্র্য।
midnapore.in