গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক
Gopegarh Eco Tourism Park
আনন্দরূপ নায়েক।
এই তো খুব কাছেই সেগুন, নিম আর সোনাঝুরি গাছে ঢাকা জঙ্গলের আড়ালে সেই কখন থেকে ডেকে চলেছে পিউকাঁহা। সঙ্গীও যে খুব দূরে রয়েছে তা নয়। সেও ডেকে উঠছে মাঝে মাঝে। অথচ তাদের দেখতে পাচ্ছি না। ডাল পাতার আড়ালে কোথায় যে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে, কে জানে!
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
এখানে বেশ পাখি দেখা যায়। শালিক, বুলবুল, দোয়েল, ফিঙে, ছাতারে। এখন পাখিদের নতুন করে বাসা বাঁধার সময়। গ্রীষ্ম পেরিয়ে এই প্রাক বর্ষার দিনে কাজুবাদাম গাছগুলোর পাতা গাঢ় সবুজ। পাতাদের ওপরে ধুলো নেই একটুও। গায়ে রোদ পড়ে ঝলমল করে উঠছে তারা। বাগানে ফুটে থাকা ফুলের ওপর, সবুজ ঘাসের ওপরে উড়ে বেড়ানো প্রজাপতির দল। তাদের কয়েকটিকে চিনতে পারলাম। গ্রাস ইয়োলো, টনি কোস্টার, প্যা নজি, লাইম, মরমন, মাইম, ওয়ান্ডারার।
সময় কাটছিল লাল মাটি থেকে অল্প উঁচুতে উড়ে বেড়ানো দুই লেমন এমিগ্রান্টের প্রণয় দেখতে দেখতে। দারুণ লাগছিল। কী সুন্দর গায়ের রঙ তাদের। ওই যে ওয়াচ টাওয়ার, উঠেছিলাম সেখানে। দূরে তাকালে কাঁসাই নদী। রেলব্রিজ। সে সব পেরিয়ে আরও দূরে টাটা মেটালিকসের কারখানা। বকুল আর নিমগাছগুলো এখন বড় হয়ে উঠেছে অনেক। ঢেকে দেয় দৃষ্টিকে। ওয়াচ টাওয়ারে উঠেও দূরে বয়ে চলা কাঁসাইকে তেমন করে দেখা যায় না। তবুও রেলব্রিজের কিছুটা তো চোখে পড়ে। ব্রিজের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ট্রেন। কয়েক বছর আগেও যখন এই এলাকা আরও বেশি নির্জন ছিল, কাঁসাই ব্রিজে ট্রেনের ঝমঝম আওয়াজ স্পষ্ট শোনা যেত। এখন নতুন রেলব্রিজ হয়েছে কংক্রিটের।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
কলেজে পড়ার সেই সময় থেকে অনেক অনেকবারই এসেছি এই গোপগড়ে। কখনও সাইকেলে দু চারজন বন্ধু মিলে, কখনও দলবেঁধে পিকনিকে। তখন লাল মোরামের পথ। সে পথে পায়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া কিছুটা। আকাশমনি আর কাজুবাদামের গাছের বনে ইচ্ছে মতো ঢুকে পড়া। ভাঙাচোরা গোপগড় এতটাই জীর্ণ হয়নি তখনও। হেরিটেজ তকমা পায়নি সে সময়। সরু সিঁড়ি বেয়ে ওঠা যেত দেওয়ালের ওপরে। কতবার ছবি তুলেছি গোপগড়ের ওপরে উঠে। এসব কথা শুনে ওখানকার কর্মী মানুষটি হেসে বললেন, "এখন উঠলে কী হবে ভাবুন! তিরিশ বছর আগের আপনি আর এখনকার আপনি। তিরিশ বছরে ভেঙেচুরে গেছে আরও কত। গতবছর বর্ষার সময় দেওয়ালের এদিকটা ভেঙে পড়ল"।
ইংরেজ কালেক্টর, ইন্ডিয়ান সিভিল সারভেন্ট এল. এস. এস. ও'ম্যা লি তাঁর ১৯১১ সালে প্রকাশিত 'Bengal District Gazetteers Midnapore'-এ লিখেছেন, "North of the racecourse a road leads to Gop House, which is situated about two miles to the west of the town, on a spur of laterite jutting out towards the river. This is a ruined house, surrounded by massive walls and a trench, of which no authentic history can now be traced."।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
তবুও মনে করা হয়, খ্রিষ্টীয় দশম শতাব্দী নাগাদ বৌদ্ধধর্মের প্রাবল্যেhর যুগে গোপগড় নির্মিত হয়েছিল। এ অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব যখন ক্রমশ কমে আসছিল, হিন্দু পুরাণের মিথ গোপগড়কে কেন্দ্র করে নতুন আবহ তৈরি করে। জনশ্রুতি অনুসারে এই গোপগড় মহাভারতের মৎস্যাধধিপতি বিরাট রাজার গোশালার অংশবিশেষ 'দক্ষিণ গোগৃহ'। 'গোপ'দের থাকার জন্যের 'গোপগৃহ'। পরবর্তীকালে 'গোপগড়' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। মানুষজন এভাবে ব্যাড়খ্যাম করেন, অজ্ঞাতবাসের সময় পাণ্ডবরা নাকি এখানে আত্মগোপন করে ছিলেন। সময় পেরিয়ে প্রবহমান সে শ্রুতি যেমনই হোক না কেন, মেদিনীপুরের গোপগড় যে এক প্রাচীনতম স্থাপত্য , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
প্রাচীন দন্তপুর, এখনকার দাঁতনের রায়বনিয়ার শাসক ছিলেন রাজা বিরাট। কোট দেশাধিপতি বিরাট গুহ। তিনি বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি প্রাচীন দন্তপুরের রাজা শিবগুহ বা গুহশিবের বংশধর। উড়িষ্যার গড়জাত অঞ্চল কোটবী বা কোটদেশ নামে পরিচিত ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে আবুল ফজলের লেখা 'আইন-ই-আকবরী'তে কটক সরকারের অধীন কোটদেশ এবং কোটবী দেশাধিপতি বিরাটের নাম পাওয়া যায়। সুতরাং মহাভারতের বিরাট রাজার কীর্তি বলে যে জনশ্রুতি মেদিনীপুরের এ অঞ্চলে আবর্তিত হয়, তা কোট রাজা বিরাটেরই কীর্তি বলে ভাবা যেতে পারে।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
মহাকাব্যের সঙ্গে জড়িয়ে বিশেষ স্থানকে মহিমান্বিত করার প্রবণতা নিয়ে ভাবনারও যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কারণ, তৎকালীন মৎস্যমদেশের অবস্থান পরবর্তীকালের রাজপুতানায়। সে যাই হোক, সময় পেরিয়ে, শতাব্দী পেরিয়ে মুসলিম শাসনকালে মুসলমানরা দখল করে নেয় গোপগিরির গোপগড়। ও'ম্যা লি লিখেছেন, ""Mednipur" is described in the Ain-i-Akbari as being a large city of Sarkar Jaleswar which containd two forts, one ancient and the other modern.."। এই প্রাচীন দুর্গটিই সম্ভবত গোপগড়, আর নতুনটি মেদিনীপুরের পুরাতন জেলখানা। পুরাতন জেলখানার দুর্গটিও কে, কবে নির্মাণ করেন, তার প্রকৃত তথ্যী অজানা।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
তবে বিশ্বাস করা হয়, রাজা মেদিনীকর যখন মেদিনীপুর নগর প্রতিষ্ঠা করেন, সে সময়েই এই দুর্গ তৈরি হয়েছিল। মোগল রাজত্বকালে তা সেনানিবাস হয়েছিল। নবাব আলিবর্দি খান ১৭৪৪ সালে এখনকার ভসরাঘাটে মারাঠা সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিতকে হত্যানর পর ১৭৫০ সালে বর্গী বিতাড়নের উদ্দেশ্যে মেদিনীপুরের এখানে স্থায়ী সেনানিবাস করেছিলেন। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাও কিছুদিন নতুন দুর্গে কাটিয়েছিলেন। গোপগিরির প্রাচীন দুর্গ থেকে সে আমলের একসময় নাকি নতুন দুর্গে, অর্থাৎ পুরাতন জেলখানায় যাতায়াতের গোপন সুড়ঙ্গপথ ছিল। গোপগিরির গোপগড় কালক্রমে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় সুড়ঙ্গপথটিও নাকি পরিত্যক্ত এবং ধ্বংস হয়।
আরও পরে গোপগড়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরাতন দুর্গটিকে কাজে লাগিয়ে তেলিনিপাড়ার জমিদার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার গোপগড় প্যা লেস তৈরি করেন। বলা বাহুল্যা, এই বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এ কথা এখন কেবল দু একটি বইতেই পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন গোপগড় ও গোপ প্যা লেসকে ২০০৬ সালের ১৫ মার্চ হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে। তারও আগে পশ্চিমবঙ্গ বন দপ্তরের উদ্যোগে ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয় গোপগড় ইকো-ট্যু রিজম সেন্টারের। যার এখনকার নাম 'গোপগড় হেরিটেজ ও নেচার ইকো-ট্যু রিজম সেন্টার'।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
কংসাবতী নদীর তীরে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে ল্যা।টেরাইট ও প্রাচীন পলিমাটি, আরও ভালো করে বলতে গেলে, কোয়াটারনারি সেডিমেন্টারি রক দিয়ে তৈরি প্রায় ৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বনজঙ্গলে ঢাকা নির্জন এই উচ্চভূমি। কংসাবতীর প্লাবনভূমি থেকে মোটামুটিভাবে ২৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। একে চ্যা প্টা মাথাওয়ালা টেবল ল্যানন্ড বলা যেতে পারে। এমন উচ্চভূমির ধার বা প্রান্তদেশগুলো ভালোই খাড়া। জঙ্গল আর আগাছায় ঢাকা। ছোট ছোট রিল গালি দিয়ে ব্যাবচ্ছিন্ন। এসব নিয়েই গোপগড়ের ক্ষয়িষ্ণু ঊষর ভূমিরূপ।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
এই এলাকার উচ্চতা প্রায় ৬৫ মিটার। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ১৫৬ সেন্টিমিটার। বার্ষিক গড় উষ্ণতা সর্বোচ্চ ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সবই তথ্যয নেচার ইকো-ট্যু রিজম সেন্টারে রাখা বোর্ড থেকে পাওয়া। গোপগড় হেরিটেজ ও নেচার ইকো-ট্যু রিজম সেন্টারের পিরামিডাকৃতির গ্রেট ট্রিগনোমযে। ট্রিক্যাচল স্টেশনে খোদিত আছে, গোপগড়ের অবস্থান ২২°২৫'১০.৭৭" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭°১৬'৫৮.০২" পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সর্বোচ্চ উচ্চতা ৬৪.৩০ মিটার বা ২১১ ফিট।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
মেদিনীপুর শহর থেকে মোটামুটিভাবে সাড়ে চার, পাঁচ কিলোমিটার দূরে গোপগড় হেরিটেজ ও নেচার ইকো-ট্যু রিজম সেন্টার। এখানে আসার মোটামুটি দুটি রাস্তা আছে। মেদিনীপুর শহর থেকে যে রাস্তাটি ইংরেজ আমলের পুরাতন জলট্যাজঙ্কিকে ডান হাতে রেখে রেললাইনের ওপর দিয়ে উড়ালপুল ধরে রাঙামাটিতে গিয়ে নেমেছে, এই পুরাতন বোম্বে রাস্তা, এখনকার মেদিনীপুর ধেড়ুয়া ঝাড়গ্রামের রাস্তায় কিছু দূর এগিয়ে গোপগড় যাওয়া যায়। আর এক রাস্তা তাঁতিগেড়িয়ার লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে বিদ্যাূসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট, তারপর রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যারলয় আর সেরিকালচার ফার্মের সামনে দিয়ে গোপগড় চলে গেছে।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
এই রাস্তায় মন ভালো করা গাছগাছালি। অনেক অনেক কাজুবাদামের গাছ। গাছের নুয়ে আসা কাণ্ডে সবুজ পাতা। এখনও এক দুটি কাজুফল ধরে রয়েছে কোনও কোনও ডালে। কাজুবাদামের খর্বাকৃতি মোটা কাণ্ডে সহজেই উঠে বসা যায়। এবং তা পর্যটন আলোকচিত্রের অভিনব উপাদান হয়ে উঠতে পারে। আর রয়েছে নিম, সেগুন, সোনাঝুরি, ইউক্যাউলিপটাস। কুসুম, ছাতিমের মতো অন্যা০ন্যব গাছ। অল্পবিস্তর শাল। এখানে মাটির রঙ লাল। যখন যাতায়াতের পিচরাস্তা হয়নি, প্রাকৃতিক লাল মোরামের পথ, এইসব বুনো গাছের জঙ্গল ভেদ করে এগিয়ে চলা, হয়তবা অনেক বেশি রোমান্টিক ছিল। এখনকার পিচরাস্তা কোথাও কোথাও খানাখন্দে ভরা। বৃষ্টির পর জল জমা বিশাল বিশাল ডোবা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় গোপগড়ে। এবং সে ক্ষেত্রে বেশ একখানি এক্সপিডিশনে যাওয়ার মতো অবাঞ্ছিত আমেজ তৈরি হতে পারে।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
তারপর দুপাশে কাজুবাদামের গাছের সবুজ পাতায় ছাওয়া জঙ্গল পেরিয়ে গোপগড় হেরিটেজ ও নেচার ইকো-ট্যু রিজম সেন্টারের গেট। ল্যা টেরাইট পাথরের ওপর পাথর সাজিয়ে ছোটখাটো পাহাড়ের আদল তৈরি করে সুন্দর অভিনব আকৃতি দেওয়া হয়েছে এই গেটের। এখানে এন্ট্রিপাস নিয়ে কয়েকশো মিটার এগিয়ে তারপর কার পার্কিং এরিয়া। দুপাশে ঝাউয়ের সারি, কী সুন্দর এই পথটুকু। পার্কিং এরিয়ার কাছে চা বিস্কুটের ছোট্টো দুটি দোকানঘর। কেক, মিনারেল ওয়াটার, এসবও পাওয়া যায়। স্থানীয় মহিলারাই এগুলির দোকানদার। এদিকে ওদিকে কাজু জঙ্গল। আর ঢালু গড়ান কিংবা পাথুরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে অপেক্ষাকৃত সমতলে নামলে সোনাঝুরি জঙ্গলের মাঝে মাঝে পিকনিক এরিয়া। কোথাও কোথাও কংক্রিটের সেড করা আছে। শীতের দিনে এই অঞ্চল আসলেই পিকনিক স্পট হয়ে ওঠে।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
এখান থেকে রাস্তা উঠে গেছে সামান্য উঁচুতে। এখন হাঁটতে হবে। রিভলভিং গেট পেরিয়ে, পায়ে হাঁটা পথ পেরিয়ে, বল্লম হাতে দুই প্রহরীর মূর্তি পেরিয়ে, নতুন তৈরি হওয়া ক্লক টাওয়ার পেরিয়ে, ফুলের বাগিচা পেরিয়ে গোপগড় হেরিটেজের দিকে। বিশেষ ছাড়পত্র অথবা কটেজে থাকার অনুমতি থাকলে ব্যা রিকেড খুলে এখানকার কর্মীরা গাড়ি যাওয়ার ব্যাবস্থা করেন। গোপগড়ে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অধীনে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির দুখানি কটেজ রয়েছে। পথিক এবং প্রিয়া। আছে এক সভাকক্ষ। ওয়াচ টাওয়ার। অনেকে একসময় থেকেওছেন এখানে। কিন্তু ইদানিংকালে থাকার এই ব্যএবস্থা বুঝি সহজ নয়। ডব্লিউ.বি.এস.এফ.ডি.এ-র ওয়েবসাইটে বুকিং-এর উপায় নেই। এখানে সম্ভবত এখন বুকিং নেওয়া হয় না। হয়তোবা সাময়িকভাবেই বন্ধ বুকিং নেওয়া। আপাতত গোপগড় এখন দিনের কিছু সময়ের জন্যে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের জায়গা। অথবা কলেজ ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া আর নব্যছ প্রেমিক প্রেমিকারা নির্জনে দু দণ্ড সময় কাটায় এখানে।
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
গোপগড় ইকো টুরিজম পার্ক | Gopegarh Eco Tourism Park
বছরের একটা সময়, শীতকালে পিকনিক পার্টির আনাগোনায় নীরবতা ভেঙে তৈরি হয় কলরব। মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায় প্রকৃতির স্বাভাবিক নির্জনতা। তবুও প্রতিদিনের বিকেল পেরিয়ে যখন সন্ধে নামে, প্রতিদিন যখন ফিরে যায় পরিযায়ী মানুষের দল, প্রকৃতি ফিরে পায় তার একান্ত নিজস্ব তরঙ্গ। অন্ধকার রাত্রির ভেতর প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়ায় শতাব্দী পেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ভগ্ন এই গড়।
midnapore.in
(Published on 31.07.2022)
তথ্যঋণ:
১. Bengal District Gazetteers – Midnapore – L.S.S. O’Malley (Published in 1911). Government of West Bengal. December, 1995.
২. মেদিনীপুর ও স্বাধীনতা – হরিসাধন দাস। সেপ্টেম্বর, ২০০১।
৩. Gopegarh and Gope Palace. West Bengal Heritage Commission. Government of West Bengal.
৪. গুগল – উইকিপিডিয়া।