গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী | Temples of Garbeta and Bogri

গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী

Temples of Garbeta and Bogri

সুদর্শন নন্দী।


অবিভক্ত মেদিনীপুরের ছোট্ট গ্রাম্য শহর গড়বেতা একটি ঐতিহাসিক ও উল্লেখযোগ্য স্থান। মহাভারতের কালের সাথে গড়বেতাকে আজ অনেকেই সম্পৃক্ত করেন। উল্লেখ করেন বকরাক্ষসের সাথে ভীমের যুদ্ধের। এসব নিয়ে মানুষ ইতিহাসের নিরিখে পোস্টমর্টেম করেন না, লোকশ্রুতিকেই গ্র্যান্টেড বলে মেনে নেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করলে ভুল হবে না যে গত কয়কবছর মানুষ গড়বেতার নাম বেশি করে জেনেছেন বিগত পালাবাদলের সময় সংবাদের শিরোনামে আসার কল্যাণে।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

আবার ফেসবুকই যাদের জ্ঞান আহরনের একমাত্র পথ, তারা গড়বেতা বোঝেন এক ট্যুরিস্ট স্পট যেখানে পাওয়া যায় শিলাবতি নদী ও গনগণিডাঙ্গার সৌন্দর্য যার ছবি ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টিংএ। আমরা এই আলোচনায় বগড়ি রাজ্যের রাজধানী হিসেবেই গড়বেতাকে চিহ্নিত করব।

অবিভক্ত মেদিনীপুরে একাধিক রাজা ও জমিদার বংশ নিজ নিজ অঞ্চলে শাসন করতেন। এর মধ্যে গড়বেতা থানার বগড়ি রাজবংশ ছিল অন্যতম। আর এই বগড়ির অন্তর্গত ছিল গড়বেতা, ছিল রাজ্যের রাজধানী। পরে তা গোয়ালতোড় অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়। বগড়ি শব্দটি বকডিহি থেকে এসেছে বলে অনেকের অনুমান। বকডিহি প্রাচীন গ্রন্থে বকদ্বীপ নামে অভিহিত। বগড়ি আর গড়বেতার সাথে মহাভারত রয়েছে জুড়ে। বকরাক্ষসের সাথে ভীমের যুদ্ধকাহিনী আজও প্রবীণ মানুষেরা বলে থাকেন।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

গড়বেতার তেইশ কিলোমিটার দূরে মল্লভুমের রাজধানী বিষ্ণুপুর অবস্থিত। এই বীর রাজাদের অনেকেই পরবর্তী কালে সন্নিহিত অঞ্চলে রাজত্ব করতেন। অনুমান অষ্টম রাজা শূরমল্ল (৭৭৫-৭৯৫ খ্রিস্টাব্দ) মেদিনীপুরের এই বগড়ি রাজ্য অধিকার করেন। মাঝের ইতিহাস জানা যায় নি। তবে একাধিকবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে বিভিন্ন রাজবংশের তা অনুমান করা যায়। এরপর চোদ্দ শতকের শেষে বা পনের শতকের গোড়ায় জনৈক রাজপুত গজপতি সিংহ এই এলাকা জয় করে বগড়ি রাজ্য নবপ্রতিষ্ঠা করেন। এর দুই ছেলে। এক ছেলে গড়বেতা এলাকার দায়িত্ব পান এবং অন্য ছেলে গোয়ালতোড় এলাকার দায়িত্ব পান।

বগড়ি রাজ্য বলে আজ আর কিছু নেই। আছে বগড়ি কৃষ্ণনগর গ্রাম। সেখানকার মূল আকর্ষণ রাজাদের কুলদেবতা কৃষ্ণরায়জীউয়ের মন্দির। শিলাবতী নদীর দুই পাড়েই রয়েছে মন্দির। বিগ্রহ দোল স্থানান্তরিত হয় উত্তর থেকে দক্ষিণ পাড়ের মন্দিরে।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

গড়বেতা নামকরণ নিয়েও রয়েছে একাধিক মত । এখানকার বনে প্রচুর বেতগাছ পাওয়া যেত সেজন্য জায়গার নাম গড়বেতা বলে অনেকের বিশ্বাস | অনেকে বলেন কুমার গুপ্তের রাজত্বকালে বেত্রবর্মা এখানকার রাজা ছিলেন | সে অনুসারে এই জায়গার নাম গড়বেতা | কারণ যাই হোক আগের সেই অরণ্যের গভীরতা নেই | শিলাবতীর তীর ভেঙ্গে ভেঙ্গে নিচ্ছে নব নব রূপ | তবে এলাকার প্রাচীন নাম যে বেতা তা ১৭৭৯ খৃষ্টাব্দে অঙ্কিত সুপ্রসিদ্ধ রেনেলের এই অঞ্চলের যে মানচিত্র রয়েছে তা থেকে পাওয়া যায়। সম্ভবত রাজারা গড় নির্মাণের পর এখানকার নাম হয় গড়বেতা।

গড়বেতার মূল মন্দির জাগ্রত দেবী সর্বমঙ্গলার । মন্দিরের অদুরেই শিলাবতী নদী উত্তর পশ্চিম দিকে বয়ে চলেছে। মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে রয়েছে একাধিক মত। অনেকে বলেন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজা বিক্রমাদিত্য। রাজা দেবীর স্বপ্ন পেয়ে এখানে এসে তালবেতাল সিদ্ধিলাভ করেন।রাজা তালবেতালের শক্তি পরীক্ষা করার সময় পূর্বমুখী এই মন্দিরকে ঘুরিয়ে দিতে বললে তারা মন্দির উত্তর দিকে ঘুরিয়ে দেয়। তাই আজও এই মন্দির অপ্রচলিতভাবে উত্তরমুখী। তবে তিনি সম্ভবত উজ্জয়ীনির বিক্রমাদিত্য নন। স্থানীয় কোন রাজা হবেন।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

কারো কারো অনুমান মন্দির নিজেই মাটি থেকে ফুঁড়ে বের হয় যা পরে সম্পূর্ণরূপে নির্মিত হয়। অনেকের মতে বগড়ির রাজা গজপতি সিংহই এই মন্দিরের নির্মাতা । যাই হোক মন্দিরটির প্রথমে নাটন্দিরের অংশ ছিল না বলেই অনুমান। অর্থাৎ প্রথমে জগমোহন সহ মূলমন্দির (বিমান) অংশটুকু নির্মিত হয়েছিল। পরে নাটমন্দির নির্মিত হয়। মাকড়া পাথরের তৈরি মন্দিরটি ওড়িশী রেখ দেউল রীতির।

মোট চারটি অংশ নিয়ে মন্দিরটি নির্মিত।মূলমন্দির ( বিমান) ত্রিরথ রেখ, দৈর্ঘ ও প্রস্থ ১৭ ফুট ৩ ইঞ্চি এবং ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট। গর্ভগৃহ অন্ধকার। মূল মন্দিরের সাথে জগমোহন অংশকে যুক্ত করেছে একটি ছোট্ট অন্তরাল। জগমোহনটি দৈর্ঘ্য ৩৪ ফুট ১ ইঞ্চি ও প্রস্থে ২৪ ফুট ৭ইঞ্চি।উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। জগমোহনটি পীঢ় রীতির। উপরের ছাদ তিনটি ধাপে বিভক্ত। এর বাইরের চারপাশে চৌষট্টি যোগিনী ও সর্পকন্যা খোদিত রয়েছে। রয়েছে অন্যান্য অলংকরণ। জগমোহনের ভেতরে রয়েছে চতুর্ভুজা আদ্যামাতার মূর্তি। মন্দিরে কোন নির্মাণ কালের উল্লেখ নেই। তবে স্থাপত্য দেখে বোঝা যায় এটি ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত। জগমোহনের সামনে ছোট্ট যোগমণ্ডপ । গর্ভগৃহ থেকে যোগমণ্ডপের ছাদ লহরাযুক্ত। পরের অংশ নাটমন্দিরটি চারচালা।পরবর্তীকালে নির্মিত। চোদ্দটি দরজা রয়েছে। দৈর্ঘ্য বরাবর দুদিকে চারটি করে আটটি এবং প্রস্থ বরাবর তিনটি করে ছটি মোট চোদ্দটি দরজা। দরজাগুলি গ্রিল দিয়ে তৈরি। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে নাটমন্দিরটি যথাক্রমে ২৪ ফুট ৩ইঞ্চি এবং ১৮ফুট ৫ইঞ্চি। উচ্চতা ২৫ ফুট।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

দেবী সর্বমঙ্গলা খুবই জাগ্রতা। দেবী সর্বমঙ্গলার মূর্তিটি বড় কালো বেসল্ট পাথরের উপর খোদাই করা সিংহবাহিনীদেবী। তিনি দশভুজা। পুরো মুখমণ্ডল লালরঙের। মূল খোদাইয়ের উপর গালা দিয়ে নির্মিত মুখাবয়ব। নাকে বড় নোলক। দীর্ঘ চোখ। পাশে রয়েছে অন্নপূর্ণা ও ভৈরবীর খোদাই করা মূর্তি। দেবীমূর্তির পাশে পঞ্চমুণ্ডি আসন। এখানে রাজারা সাধনা করতেন। দেবীর নিত্যপূজা হয়। ব্যবস্থা রয়েছে ভক্তদের জন্য প্রতিদিন অন্ন প্রসাদের। এখানকার দুর্গাপূজা মেদিনীপুরের অন্যতম পূজা। বিশেষ করে দুর্গাপূজায় নবমীর দিন সর্বমঙ্গলার থানের পূজা জেলায় উল্লেখযোগ্য। কয়েকবছর হল মন্দিরটি সংস্কার করে নতুন রং দেওয়া হয়েছে। বেড়েছে মন্দিরের বহিরাঙ্গের শোভা।

সর্বমঙ্গলা মন্দিরের অদূরে রয়েছে কোঙরেশ্বর মহাদেবের মন্দির এবং বামুনপাড়ায় রাধাবল্লভজীউয়ের মন্দির। কোঙরেশ্বর মন্দির অনেকটা সর্বমঙ্গলা মন্দিরের অদলে তৈরি । নির্মাণ করেন রাজা গজপতি সিং। আর রাধাবল্লভজীউর মন্দিরটি মাকড়া পাথরের তৈরি, দক্ষিণমুখী। ১৬৮৬ সালে নির্মাণ করেন রাজা দুর্জন সিংহ মল্ল। অর্থাৎ এসময় বা তাঁর আগে পরে বিষ্ণুপুরের প্রতাপশালী মল্লরাজারা এই এলাকা আবার শাসন করতেন। যতদুর জানা যায়, সতের শতকের শেষের দিকে বগড়ী রাজ্য অর্থাৎ এই গড়বেতা এলাকাও মল্ল রাজাদের অধীনে আসে।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

উপরোক্ত মন্দির ছাড়া সুকুলপাড়াতেও একাধিক জীর্ণ মন্দিরের দেখা মেলে। তবে সত্যনারায়ণ মোড়ের কাছে বাজারের পাশে সিংহদের লক্ষ্মী জনার্দন মন্দিরটি এবং সংলগ্ন দ্বাদশ শিব মন্দির উল্লেখযোগ্য। লক্ষ্মী জনার্দন মন্দিরটি অনেকটা বিষ্ণুপুরের লালজীউ মন্দিরের সাথে মিল রয়েছে। সম্ভবত উনিশ শতকের প্রথম দিকে নির্মিত মন্দিরগুলি। প্রাচীর দিয়ে মন্দিরগুলি ঘেরা রয়েছে।

গড়বেতা থেকে বগড়ি প্রায় দশ কিলোমিটার পথ। এই বগড়িতেই রয়েছে বিখ্যাত কৃষ্ণরায়জীউয়ের মন্দির। প্রথম মন্দির শিলাবতীর গর্ভে হারিয়ে গেছে । পরে আবার নির্মিত হয়। পঞ্চরত্নের মন্দির এটি। এটি নির্মাণ করেন বিষ্ণুপুরের সনাতন মিস্ত্রি। ১৮৫৫তে এটি নির্মিত। বগড়ী কৃষ্ণরায়জীউর সেই পুরানো তথা প্রথম মন্দিরটি নির্মাণ করেন গজপতি সিংহের সেনাপতি রাজ্যধর রায়। বর্তমান মন্দিরের অপর পাড়ে (দক্ষিণ পাড়) রঘুনাথবাড়িতে রয়েছে নবরত্ন মন্দির। মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে একাধিক লোকশ্রুতি রয়েছে। জড়িয়ে রয়েছে মহাভারত কালের বক রাক্ষস নিধনের ঘটনাও। এই এলাকা ছিল বকরাক্ষসের অধীনে। পান্ডবরা বনবাসকালে এই জায়গায় এসে বসবাস করেন ও ভীম এখানেই বকরাক্ষসকে হত্যা করে। সেই সংবাদ পেয়ে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ এখানে আসেন এবং যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি গড়ান। পরবর্তী কালে যে বিগ্রহ এই শ্রী কৃষ্ণজীউরায়ের মন্দিরে অবস্থান করেছেন। ।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

অনেক বলেন শ্রী কৃষ্ণ পৌত্র অনিরুদ্ধ তাঁর পিতামহ শ্রীকৃষ্ণের জন্য যে মুর্তি বানিয়েছিলেন তাতে দুটি মুর্তি জীবন্ত হয়ে ওঠে অনিরুদ্ধের কাছে। সেই দুটি মুর্তির একটি মুর্তি রাজস্থানের জয়পুরে এবং অন্য মুর্তিটি বগড়িতে কৃষ্ণরায় মন্দিরে পুজিত হন।

তবে গ্রহণযোগ্য যে কাহিনী বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন তা রাজ্যধর রায়ের কাহিনী। ইনি ছিলেন রাজা গজপতি সিংহের বিশ্বস্ত দেওয়ান। ইনি নদীয়া কৃষ্ণনগরের মানুষ। তাঁর আসল নাম মুকুন্দলালl


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।
গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

আবার নাম নিয়েও রয়েছে মতভেদ । অনেকের মতে বিগ্রহ কৃষ্ণরাই নামে পুজিত হত। শ্রীরাধা বিগ্রহের জন্য রাই নাম বর্ণিত হত। পরে রায় বংশের উপাধির সাথে কুলদেবতার নাম রাখা হয় কৃষ্ণরায়। শিলাবতী নদীর দক্ষিণ পাড়ের মন্দির ১৫০৫ খৃষ্টাব্দে নির্মাণ করেন গজপতি সিংহের পৌত্র রাজা রঘুনাথ সিংহ। দোলের সময় বিগ্রহ নিয়ে আসা হয় শিলাবতীর উত্তর পাড়ের বগড়ী কৃষ্ণরায়জীয়ের মন্দির থেকে। এখানেই হয় এলাকার তথা মেদিনীপুরের বিখ্যাত বগড়ির দোলমেলা তথা মহোৎসব। হাজার হাজার উৎসবমুখী মানুষ ভিড় জমান এই মেলায়। দোলের পর আবার বিগ্রহ উত্তর পাড়ের মন্দিরে ফিরে যায়। তবে বিগ্রহ সবসময় বগড়ির মন্দিরে রাখা থাকে না । চলে আসে দেড় কিলোমিটার দূরে মায়তার কৃষ্ণরায়জীউয়ের মন্দিরে। অর্থাৎ এখানেও পাবেন আরেকটি মন্দির। মায়তার মন্দিরের রাসমেলা আবার বিখ্যাত। এছাড়া মন্দিরে অন্নকূট মেলা, জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমীর সময় প্রচুর ভক্তসমাগম হয়। এককথায় বগড়ি রায়ের কুলদেবতার বিগ্রহের অবস্থান তিনটি মন্দিরে। বগড়িরকৃষ্ণনগরে শিলাবতী নদীর দুই তীরে নির্মিত পঞ্চরত্ন ও নবরত্ন মন্দিরে এবং দেড় কিলোমিটার দূরের মায়তার মন্দিরে।


গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।
গড়বেতা ও বগড়ির মন্দিরকাহিনী, Temples of Garbeta and Bogri
সব ছবিঃ লেখকের তোলা।

বগড়ির প্রসিদ্ধ দোল উৎসবের কথা বলতে গিয়ে ঠাকুর ও মা সারদার ভক্তদের জন্য দুকথা বলে নিলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না। বগড়ির অদূরে পিয়াসালা গ্রামে মা সারদার মাসি দীনময়ী দেবীর বাড়ি ছিল। মা এই বগড়ির দোল মেলা দেখতে এসেছেন বলে ব্রহ্মচারী অক্ষয়চৈতন্যের লেখা থেকে জানা যায়। এই প্রতিবেদক কদিন আগে সেই পুন্যস্থান ঘুরে এসেছেন। দেখা গেল, বর্তমানে সেই মাসির বাড়িতে গড়ে উঠেছে বিষ্ণু মন্দির । মায়ের সেই মাসির পরবর্তী প্রজন্মের আত্মীয় অসিত চক্রবর্তী জানালেন মা আসতেন বগড়ির দোলমেলায় কৃষ্ণরায়জীউয়ের দোল খেলা দেখতে। শিলাবতী নদী পেরিয়ে উত্তর পাড়ে মূল মন্দিরও মা দর্শনে গেছেন । তিনি এও জানালেন যে এখানে মাকে কেন্দ্র করে রয়েছে পাঠচক্র এবং বাৎসরিক অনুষ্ঠানও হয় মায়ের। রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা আসেন এই অনুষ্ঠানে।


midnapore.in

(Published on 05.03.2022)

তথ্য সাহায্যঃ

১) মেদিনীপুরঃ তরুণদেব ভট্টাচার্য।

২) পুরাকীর্তি সমীক্ষা মেদিনীপুরঃ তারাপদ সাঁতরা

৩) মেদিনীপুর জেলার পুরাতত্বঃ প্রণব রায়

৪) পশ্চিমবঙ্গঃ মেদিনীপুর সংখ্যা

৫) দর্শন লোকসংস্কৃতি পত্রিকা অক্টোবর ১৯৯৭ সংখ্যা।