রাকেশ সিংহ দেব।
Home » Medinikatha Journal » Rakesh Singha Dev » Elephent of Medinipur, negligence and concern
রাতের অন্ধকারে হিমের চাদর ভেদ করে দূর থেকে ভেসে আসা মানুষের হই-হট্টগোল, মুহুর্মুহু শব্দবাজির আওয়াজ আর জঙ্গলের ধারে কয়েকটি লাল আগুনশিখার নাচানাচি। সারা গ্রাম ঘুমহীন সতর্ক চোখে জেগে রয়েছে ঘরে! কারন, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে তারা হামলা করেছে মাঠের ভরা ফসলে। আঠারো শতকের বাংলায় অতর্কিতে বর্গি হামলার মতো দলমা থেকে আগত এই নব্য বর্গি হামলায় ত্রস্ত অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের সাধারন মানুষ থেকে প্রশাসন। আটের দশকের শেষের দিকে দলমার জঙ্গল থেকে হাতিরা আসতে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গে। তার আগে এখানকার মানুষের হাতির সাথে পরিচিতি ছিল কিছু পোষা হাতির দৌলতে। গ্রাম ও শহরতলির দিক থেকে কিছু মাহুত বছরের বিভিন্ন সময়ে তাদের পোষা হাতিদের নিয়ে মাগন বা আদায়ে বের হত। দুলকি চালে কপালে ও শুঁড়ে গাঢ় সিঁদুর লাগিয়ে হাতিঠাকুর হেলেদুলে চলতেন পথে পথে। বাড়ীর মেয়ে-বউরা শাঁখ বাজিয়ে উলুধ্বনি দিতে দিতে দেখত হাতি ঠাকুরের সেই ভারিক্কি চাল। তারা কুলোয় করে ধান, চাল, বাগানে কলা , বেগুন, মুলোর সাথে খুচরো পয়সাও দিত মাহুতের ঝোলায়। কচিকাঁচা থেকে যুবকরা হাতির মতো বলবান হওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা হাতির লেজ ধরতে চাইত।
পশ্চিম মেদ্দিনীপুর তথা বর্তমান ঝাড়গ্রাম জেলার সবচেয়ে কাছের হাতির অভয়ারণ্য হল ঝাড়খন্ডের দলমা, যা এখানকার হাতির মূল উৎস। তবে দলমা ছাড়াও রাঁচি-দুমকা’র পথ দিয়েও দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলায় [বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান(আংশিক)] হাতির অনুপ্রবেশ ঘটে থাকে। তবে এখানকার হাতিদের গায়ে দলমার ছাপই স্পষ্ট। এই কারণে এদের এক বিশেষ নামে ডাকা হয় ‘দলমার দাঁতাল’ বা ‘দলমার দামাল’। বর্তমানে দলমায় হাতির সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। এরফলে দলমার শুষ্ক পর্ণমোচি জঙ্গল হাতিদের বেঁচেবর্তে থাকবার জন্য উপযুক্ত খাবারের জোগান দিতে পারছে না। এছাড়া খনীজ সম্পদ সমৃদ্ধ এই এলাকায় খনি অঞ্চলের ব্যাপক প্রসারের জন্য এখানকার বনাঞ্চল দ্রুত সংকুচিত হয়ে আসছে।
ক্রমবর্ধমান মাইনিং এবং তার জন্য ডিনামাইট-এর বিস্ফোরণের আওয়াজ হাতিদের সেখান থেকে সরে আসতে বাধ্য করছে। এই হ্রাসপ্রাপ্ত বনাঞ্চলে হাতিদের মজুত খাবার এবং হাতির বর্ধিত সংখ্যার আনুপাতিক অসামঞ্জস্যতার কারণে খাবারের সন্ধানে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে হাতিরা দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করছে। অনেকটা মানুষ যেভাবে তার জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কর্মসংস্থানের আশায় ভিনরাজ্যে পাড়ি জমায়; ঠিক তেমনিভাবে সহজলভ্য খাবার ও পানীয় জলের আশায় দলমার দামাল দাঁতালের দল প্রবেশ করছে তাদের দ্বিতীয় ঘর জঙ্গলমহলের চার জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। এই বুনো হাতিরা এ রাজ্যে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত থাকত। কিন্তু বিগত কয়েকবছর থেকে তারা আরও বেশি সময় রয়ে যাচ্ছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যা।
এই করিডরটি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর বন বিভাগের দালাপানি রিজার্ভ ফরেস্টকে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের কাঁকড়াঝোড় সুরক্ষিত বনভূমির সাথে সংযুক্ত করেছে। এই করিডরের মাধ্যমে দলমা অভয়ারণ্যের হাতিরা ঝাড়্গ্রাম সহ পশ্চিম মেদিনীপুর বন বিভাগের বিভিন্ন জঙ্গল এলাকায় প্রবেশ করে। হাতিরা চলাফেরা করে বাসাডেরা রিজার্ভ ফরেস্টের পাহাড়ি বনভূমির পাশাপাশি মানুষের আবাসস্থল এবং কৃষি ক্ষেত্রের উপর দিয়ে। করিডরটিতে বর্তমানে ভাল বনাঞ্চল রয়েছে, তবে জনপদ এবং কৃষিসহ সমভূমিতে মানুষের উপস্থিতি হাতির চলাফেরার উপর প্রভাব ফেলছে।
ডুমরিয়া-নয়াগ্রাম করিডোরটি জামসেদপুর বন বিভাগের ডুমরিয়া রিজার্ভ ফরেস্টের সাথে পশ্চিমবঙ্গের নয়গ্রাম রিজার্ভ ফরেস্টকে সংযুক্ত করেছে। জাতীয় হাইওয়ে ৩৩, যা ঝাড়খণ্ডকে যুক্ত করে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের সাথে তা পিটাজুরী গ্রামের কাছে করিডোরটিকে দ্বিখণ্ডিত করে চলে গেছে। এছাড়াও, সুবর্ণরেখা নদীর সেচ খাল ডুমরিয়া রিজার্ভ ফরেস্টের নিম্নাংশে এই করিডরটির উপর দিয়ে গেছে। অবকাঠামোগত উপাদান এখানকার হাতি চলাচলের প্রধান বাধা।
দলমার মতোই দক্ষিণবঙ্গে হাতিদের জীবনধারণের জন্য উপযুক্ত জঙ্গলের খুব অভাব রয়েছে। এখানকার জঙ্গলে হাতিদের উদরপূর্তির জন্য ঘাস, বাঁশ, কাঁঠাল, চালতা গাছ নেই বললেই চলে। এখানকার জঙ্গলের শাল, আকাশমণি, ইউক্যালিপ্টাস হাতিদের থাকবার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারেনা। এরফলে জীবনধারনের প্রয়োজনে নিজেদের খাদ্যাভ্যাস বদল করে হাতির পাল হানা দিচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া লোকালয় এবং সেখানকার কৃষিজমিতে। আর্থ সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা এই এলাকার প্রধান ফসল ধান। বর্তমান সময়ে উন্নত সেচকার্যের বহুল ব্যবহারের ফলে এখানকার জমিতে সারাবছর ধরেই ধান চাষ হচ্ছে। তাই জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে হাতিরা সহজে তাদের পেট ভরানোর জন্য বেছে নিচ্ছে জমির ধান, আলু,কপি, শাক সব্জী। ধানগাছে নতুন ধান আসবার সময় কচি ধান (স্থানীয় নামে ‘দুধি ধান’)-এর গন্ধে আকর্ষিত হচ্ছে হাতির পাল। এরফলে দক্ষিণবঙ্গের এইসব এলাকার ধান ,আলু এবং সব্জী হয়ে উঠছে হাতিদের পছন্দের খাবার। খাবারের অভাবে এখন লোকালয়ে ঢুকে ধান চালের গোলা, ভূষিমাল দোকান এমনকি বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলের গোডাউনে হানা দিচ্ছে হাতিরা।
এখানকার জঙ্গল লগোয়া আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে হাতি চলে আসবার অন্যতম কারণ এখানকার মহুয়া ও হাঁড়িয়া। একথা বলবার অপেক্ষা রাখেনা গোয়ার ‘ফেনি’-র মতো জঙ্গলমহল তথা দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম ট্রেডমার্ক পানীয় হল মহুয়া ও হাঁড়িয়া। গত ছয় সাত বছরে হাতির খাবারের স্বাদ বদলে গেছে। মাঠের ধান থেকে দাঁতালের খাদ্যাভ্যাসে ঢুকে পড়েছে পানীয়। জঙ্গল লাগোয়া অনেক গ্রামেই মহুয়া-হাঁড়িয়া তৈরি করা হয়। অনেক বাড়িতে মহুয়ার প্রধান উপকরন মহুল গাছের ফুল এবং তৈরি করা মহুয়া -হাঁড়িয়া মজুত করে রাখা হয়। সেসময় এর গন্ধে ম-ম করতে থাকে চারপাশের এলাকা। এই উগ্র গন্ধে আকর্ষিত হয়ে জঙ্গলের হাতি গ্রামে ঢোকে। এসব খেয়ে মত্ত হয়ে হাতি এলাকার মাটির বাড়িঘর ভাঙে। জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। অনেকসময় এই মত্ত হাতিদের তাণ্ডবে জীবনহানি ঘটে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়।
আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাতের ঘটনা নতুন নয়। কোথাও বিরল বন্যপ্রাণের শিকার হচ্ছে তো কোথাও বন্যপ্রাণের তান্ডবে মানুষের কষ্টার্জিত ফসল ও সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে। অনভিপ্রেত এই সংঘর্ষের ফলে দুই পক্ষেরই অপূরণীয় ক্ষতি ঘটছে।
দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমপ্রান্তের জঙ্গল লাগোয়া এলাকাগুলিতে কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সর্বাধিক। একদিকে প্রায় সারা বছর ধরে দলমার হাতদের আসা যাওয়া, অন্যদিকে স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়া হাতি এই দুইয়ের দাপটে নাজেহাল এলাকাবাসী। বন দপ্তর সতর্ক থাকলেও খবর পেয়ে বনকর্মীরা এলাকায় পৌঁছতে পৌঁছতেই ক্ষয়ক্ষতি করে জঙ্গলে ফিরে যাচ্ছে হাতির পাল। দীর্ঘদিন ধরে হাতিদের এই তাণ্ডব সহ্য করতে করতে তৈরি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। কষ্টার্জিত ফসল দিনের পর দিন নষ্ট হতে দেখে তারা রুখে দাঁড়াচ্ছে। প্রচুর শ্রম এবং খরচের বিনিময়ে এই এলাকায় যেটুকু ফসল উৎপন্ন হয় তার বহুলাংশ পা দিয়ে মাড়িয়ে, খেয়ে নষ্ট করে হাতির পাল। হাতি তাড়াতে কোথাও রাত জাগে মানুষ, কোথাও জমিতে চাষাবাদ বন্ধ রেখে বসতবাড়ই ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকে- এমন ঘটনাও দেখতে পাওয়া যায়।
কার্যত দিনের পর দিন জীবন ও জীবিকার উপর হাতির এই আগ্রাসনে পিছোতে পিছোতে একেবারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এখানকার মানুষদের। ফলে হাতিদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধও অনেক উগ্র রূপ নিয়েছে। এরফলে জীবনহানি ও ফসলহানী এর ক্ষতিপূরণ দ্বিগুন করে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বনদপ্তরের সহযোগিতায় লাগাতার সচেতনতা শিবির চালিয়ে যাচ্ছে – যাতে মানুষ ও বন্যপ্রাণের সংঘাত কমিয়ে ফেলা যায়। হাতির আক্রমনে মৃত্যু হলে ক্ষতপূরণ বাবাদ চার লাখ টাকা পাওয়া গেলেও সেটা ক্ষতে সাময়িক প্রলেপ মাত্র! ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বাড়লেও তা পেতে দীর্ঘ সরকারি টালবাহানা চলে ফলে এই এলাকার মানুষের ক্ষোভ সহজে কমবার কোনও লক্ষ্মণ নেই।
Midnapore, JhargramForest Division
18/2/2020 BHADUTALA RANGE, MIDNAPORE DIVISION (FEMALE)
31/5/2020 LALGARH RANGE, MIDNAPORE DIVISION (PREGNANT FEMALE)
07/1/2020 PODHIYA, LALGARH RANGE , MIDNAPORE DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
15/1/2020 MANIKPARA RANGE , JHARGRAM DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
16/1/2020 GHUCHISOLE, ANANDAPUR PS, PASCHIM MEDINIPORE 1 PEOPLE (MAN)
18/1/2020 DHENGASOLE SALBONI, MIDNAPORE DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
19/1/2020 JATRA BISHNUPUR SALBONI, MIDNAPORE DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
3/2/2020 GOALDIHI (JHARKHAND BORDER) JHARGRAM DIVISION. 2 PEOPLE (WOMAN AND CHILD)
9/3/2020 DHERUA, JHARGRAM DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
5/5/2020 KRISH GARDEN, JHARGRAM DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
20/5/2020 SIRSI, JHARGRAM DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
26/5/2020 KADMASOLE, LALGARH RANGE, MIDNAPORE DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
29/7/2020 CHAMPASOLE, CHANDRA RANGE, MIDNAPORE DIVISION 1 PEOPLE (MAN)
হাতি তাড়াতে নাজেহাল বন দপ্তরের এই সঙ্কটের সময়ে তাদের একমাত্র নির্ভরযোগ্য অস্ত্র হুলাপার্টি। এই হুলাপার্টি বনের হাতিকে নির্দিষ্ট দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে পটু। গ্রামের কিছু অকুতোভয় সক্ষম আদিবাসী যুবক পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এই কাজ করে থাকে। কোথাও হাতি ঢুকেছে খবর এলে সেই এলাকার বন আধিকারিক যোগাযোগ করেন স্থানীয় হুলাপার্টির সঙ্গে। অনেকসময় বাইরে থেকেও হাতি তাড়ানোর জন্য হুলাপার্টি নিয়ে আসতে হয়। পিক আপ ভ্যানে করে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং রসদের সাথে তাদের নিয়ে আসা হয় হাতি উপদ্রুত এলাকায়। প্রথমে এলাকায় কয়েক ঘন্টা রেইকি করে হাতির অবস্থান বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। এরপর খেয়েদেয়ে বিকেল পর্যন্ত চট এবং তার দিয়ে চলে মশাল বা হুলা বানানোর কাজ। মশাল বানানোর জন্য লাগে চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা লোহার শিক। এই লোহার শিকের একদিকটা হয় সূচালো, অনেকসময় ত্রিশূলের মতো হয়। এই সূচালো অংশের কিছুটা নীচে তারের সাহায্যে চট বেঁধে বলের মতো তৈরি করা হয়। এরপর হাতি তাড়ানোর সময় সেই চটের অংশ পোড়া মোবিল, ডিজেল দিয়ে ভিজিয়ে মশাল জ্বালানো হয়।
হাতি তাড়াতে এই মশালই হুলাপার্টির মোক্ষম অস্ত্র। এছাড়াও লম্বা সরু তারের আগায় চটের বল বেঁধে মশালের মতো জ্বালিয়ে তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাতি তাড়ানোর সময় ব্যবহার করা হয়। এরসঙ্গে থাকে সার্চলাইট, শব্দবাজি, সাইরেন লাঠি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। বিকেলের পর থেকে শুরু হয় হাতি তাড়ানোর কর্মসূচী। হুলা জ্বালিয়ে তারা ঢুকে পড়ে উপদ্রুত এলাকায়। প্রথমে হাতি লক্ষ্য করে তাদের দিকে দু-একটা হুলা ছুঁড়ে দেওয়া হয়। ভয় পেয়ে পিছু হটে হাতি চলা শুরু করলে শব্দবাজি ফাটিয়ে হল্লা করতে করতে তাদের নির্দিষ্ট দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সব সময় কাজটা এত সহজ হয়না। হাতি তাড়াতে গিয়ে অনেকসময় রাত কাবার হয়ে যায়। দিনের বেলায় আবার হাতি তাড়ানো সম্ভব নয় ফলে ফের চেষ্টা করতে হয় পরের দিন বিকাল থেকে সকালের আলো ফোটা পর্যন্ত। কোনও গ্রামের মানুষ চায়না যে তাদের জমির উপর দিয়ে হুলাপার্টি হাতিদের তাড়িয়ে নিয়ে যাক। এরফলে হাতি তাড়ানোর সময় গ্রামবাসীদের সাথে হুলাপার্টির অনেকসময় বচসা, সংঘর্ষ পর্যন্ত হয়।অনেকসময় অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হাতি তাড়াতে গিয়ে হুলাপার্টির সদস্যরা হাতিদের দিকে বিশেষ করে শাবকদের উপর পটকা, হুলা, জ্বলন্ত টায়ার ছুঁড়ে তাদের আহত করে যা বিভিন্ন সময়ে এদের কর্মকান্ডের দিকে প্রশ্ন তুলেছে।
সারা পিঠ জুড়ে লাল ধুলোর আস্তরণ, কাদামাখা পা, অস্থির চালচলন, কখনও মারকুটে স্বভাব – এককথায় এই হল দক্ষিণবঙ্গের হাতিদের চালচিত্র। দল বেঁধে জমিতে নেমে শিশুসুলভ আনন্দে হুটোপুটি করে নষ্ট করে বিঘার পর বিঘা জমির ধান, আলু, সব্জী। সারাবছর ধরে হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে এখন সেটাও তাদের গা সওয়া হয়ে গেছে ! এরকম কুছ পরোয়া নেহী ভাবভঙ্গী নিয়ে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ন এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো দলমার দামালেরা আজও ব্রাত্য! কিন্তু কেন? উত্তরবঙ্গের হাতিদের লোকালয় থেকে দূরে জঙ্গলের মধ্যে আটকে রাখার কাজটি মোটামুটি সফলভাবে করা সম্ভব হয়েছে। এখানে হাতিদের জন্য আলাদা জোন এবং অবাধ বিচরণের জন্য রয়েছে অভয়ারণ্য। বাইরের অনেক পর্যটক এখানকার জঙ্গলে হাতিদের দেখতে আসে। পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে অনেক কুনকি হাতি। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা এবং অনুকূল পরিবেশের বদান্যতায় এখানকার হাতি-মানুষের মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ন সহবস্থান গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এখনও কিছু সংঘাত ঘটলেও তার সংখ্যা সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পাচ্ছে। এখানকার হাতিরা অপেক্ষাকৃত সুশীল এবং নিজেরা নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবার কারণে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফারদের কাছে এরা পছন্দের বিষয় হয়ে উঠেছে। ক্রমবর্ধমান সাফারির চাহিদা এবং পর্যটকদের আসবার ফলে সরকারের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছে এখানকার সাধারণ মানুষ। সবমিলিয়ে এখানকার হাতি জনমানসে পেয়েছে এক ভালবাসা, জনপ্রিয়তা এবং মর্যাদার আসন।
উল্টোদিকে দক্ষিণবঙ্গের হাতিদের ক্ষেত্রে বিধি বাম। এখানকার রুক্ষ, ঊষর পরিবেশে নেই ঘন জঙ্গলের আচ্ছাদন। এখানের জঙ্গলে হাতিদের থাকবার মতো উপযুক্ত পানীয় জল এবং খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। এরফলে এখানকার হাতিদের প্রখর রোদের হাত থেকে বাঁচতে গায়ে ধূলো কাদা মেখে খাবারের সন্ধানে যাযাবরের মতো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে হয়। এদের নির্দিষ্ট এলাকায় আটকে রাখবার জন্য ২০০২ সালে ‘ময়ূরঝর্ণা হাতি সংরক্ষণ প্রকল্প’-এর কাজ শুরু হলেও তা আজও সম্পূর্ন হয়নি। এদের অস্থির মতিগতি এবং আক্রমনাত্মক স্বভাবের জন্য সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কোনও পর্যটক বা ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার এদের দিকে ক্যামেরা বাগিয়ে ছোটার সাহস পাননা। এক দানবাকৃতি জীবন্ত বিভীষিকার মতো সবাই এদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে। এভাবেই এখানকার হাতিদের দৈনন্দিন কষ্টকর জীবনযাত্রার সাথে জুড়েছে এক দীর্ঘ উদাসীনতা এবং অবহেলা !
বিগত কয়েক দশক ধরে বছরের পর বছর নিয়মিত হাতির পাল আসছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এখনও এখানকার মানুষ এদের আপন করে নিতে পারল না ! খাবার আর পানীয় জলের সন্ধানে যারা এতটা পথ উজিয়ে এখানে এল, তাদের গায়ে হানাদারের তকমা সাঁটিয়ে পেছনে লেলিয়ে দেওয়া হল হুলাপার্টি। জমির ফসল বাঁচাতে রাতের অন্ধকারে বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের বেড়া দিয়ে হাতিদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে গায়ে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে হাতির পাল যখন রুখে দাঁড়িয়ে মানুষকে আক্রমণ করছে, আমরা তখন তাদের দিচ্ছি খুনীর পরিচয়! এভাবে দিনের পর দিন চলতে চলতে এখানকার মানুষ হাতিদের তাদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছে। এত বছরেও বন দপ্তর জঙ্গলে হাতিদের থাকবার মতো উপযুক্ত পরিবেশ এবং খাবারের সংস্থান করতে পারেনি।
এই ব্যার্থতা অবশ্যই পীড়াদায়ক। হাতির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে পর্যবেক্ষন করে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে এখানকার কৃষিজীবী মানুষদের হাতির উপর ক্ষোভ অনেকটাই কমবে। যদিও কোনও জীবনহানির ক্ষতিপূরণ অর্থমূল্যে কখনও দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক অনভিপ্রেত ঘটনা যাতে অদূর ভবিষ্যতে না ঘটে সেইজন্য হাতি উপদ্রুত এলাকার মানুষদের মধ্যে হাতি সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটানো প্রয়োজন। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বন দপ্তরের পাশে থেকে তাদের সাহায্য করা প্রয়োজন। পরিস্থিতি অনুসারে তথ্যের আদানপ্রদানের ফলে বহু ক্ষেত্রেই আমরা মানুষ-হাতি সংঘাত এড়িয়ে চলতে পারি। সবাই এই ব্যাপারে সাধ্যমত সদর্থক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যা আগামীদিনে দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন এবং এখানে আগত দলমার হাতিদের নতুন আশার আলো দেখাবে। ততদিন সতর্ক থেকে দলমার দামালদের সম্মানের সাথে এড়িয়ে চলা, বৈরীতা সরিয়ে রেখে একটু সহনশীল সহমর্মিতার প্রদর্শনই দিতে পারে এই গভীর সমস্যার ক্ষতে কিছুটা স্বস্তির প্রলেপ।
আবার এল দুঃসংবাদ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তড়িদাহত হয়ে মারা গেল একটি কমবায়সী হাতি।
শুনেছিলাম, কোনও কোনও সকাল থাকে যা নাকি রাতের চেয়েও অন্ধকার! এমন এক অন্ধকারময় দুঃখের সকালের উপলব্ধি আমারও হয়ে গেল সময়ের ফেরে। স্কুলের জন্য তৈরি হচ্ছি এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল। খবর পেলাম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের ৮ নং গড়মাল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জোড়াকুসমা শুশনিবাড়ি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের জঙ্গল লাগোয়া ধানজমিতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। খবর পাওয়া মাত্র বাইক নিয়ে বের হলাম, কারণ দুর্ঘটনাস্থলটি আমার স্কুলের পথেই। গতরাতে খবর পেয়েছিলাম এখানকার জঙ্গলে প্রায় ৭০টি হাতির একটি দল আস্তানা গেড়েছে। বন দপ্তর থেকে রাতে হুলাপার্টি দিয়ে হাতিদের জঙ্গলের ভেতর তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি হাতির বাচ্চা দলছুট হয়ে পড়ে। পরে সেই বাচ্চাটিকে বন দপ্তরের গাড়ি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। স্থানীয়দের বিবরণ অনুযায়ী, গতকাল রাতে বাচ্চা হাতিটিকে নিয়ে যাওয়ার পর রাত্রি ৯.৩০- ১০ টার সময় হাতির দলটি এলাকায় আবার ফিরে আসে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এখানকার গ্রামের জঙ্গল সংলগ্ন জমিতে ধান খাওয়ার জন্য নামে। এই জায়গাটিতে চাষের জলসেচনের মোটর চালানোর জন্য জমির উপর দিয়ে সিমেন্টের খুঁটির মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে, কুয়াশা আর হাতি তাড়ানো মানুষজনের হল্লায় পালের কোনও হাতি জমির উপরে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা মারে। এরফলে সেটা কাত হয়ে যায়। আগেরদিন বৃষ্টিপাতের কারণে নরম কাদামাটিতে খুঁটির গোড়াগুলো যথেষ্ট শক্ত ছিলনা ফলে পরবর্তী খুঁটিটিও তারের টানে পড়ে যায় ।
ঐ সময় জমিতে ধান খেতে ব্যস্ত থাকা হাতিগুলির মধ্যে থাকা একটি অপেক্ষাকৃত কম বয়স্ক হাতির উপর বৈদ্যুতিক তার সমেত একটি খুঁটি পড়ে যায়। হাতিটি তৎক্ষনাৎ তড়িতাহত হয়ে মারা যায়। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে মৃত হাতিটিকে দেখতে ঐ গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলি থেকে কাতারে কাতারে মানুষের ঢল নামে। গ্রামের মেয়ে-বউরা ফুল, সিঁদুর দিয়ে হাতি ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানায়। আরও বেলা বাড়লে (সকাল ১১:৩০ নাগাদ) ঘটনাস্থলে বন দপ্তরের আধিকারিক এবং কর্মীরা এসে পৌঁছান। জানতে পারি ময়নাতদন্তের পর মৃত হাতির দেহটি টুকরো করে দাহ করা হবে। হাতে সময় বিশেষ ছিলনা। স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সাথে হাতির পালটির বর্তমান অবস্থান এবং গতিবিধির খবরাখবর নিয়ে স্কুলের পথ ধরলাম।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য গত ২৪এপ্রিল ২০১৬ প্রখর গরমের সময় এই একই জায়গায় তড়িদাহত হয়ে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু ঘটেছিল। এই ঘটনা যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী!
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তড়িদাহত হয়ে মারা গেল একটি কমবয়সী হাতি। তারপর সারাদিন ব্যাপী নানান কর্মকাণ্ডে জীবন্ত হল সেই চিরাচরিত প্রবাদ 'মরা হাতি লাখ টাকা!'
স্কুল থেকে ফিরে আবার গেলাম ঘটনাস্থলে। দেখলাম ময়নাতদন্তের পর সারাদিন ধরে মৃত হাতির দেহটি টুকরো করে ফেলা হয়েছে। এরপর যথাসময়ে একে একে এসে পৌঁছায় ১২ ট্রাক্টর কাঠ, ড্রাম ভর্তি ডিজেল, পোড়া মোবিল। যারা এই কাজগুলি করল পাশের গ্রাম থেকে আসা সেই সমস্ত আদিবাসী মানুষদের কাছ থেকে জানতে পারলাম রীতিমতো এক লক্ষাধিক টাকার কন্ট্রাকটের বিনিময়ে মৃত হাতিটির শেষকৃত্য করা হল। এসব দেখে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছিলাম না! বেঁচে থাকতে সরকার এদের তাড়াতে বলছে আর মারা গেলে বন দপ্তর ঘটা করে লক্ষাধিক টাকায় শ্রাদ্ধকার্য করছে। সারাদিন ধরে বিপুল অর্থ ও শ্রমের অপচয়ের পর এসব কাণ্ডকারখানা দেখতে দেখতে মনে হল,-‘বেচারা হাতিটি মরিয়া গিয়া প্রমান করিল, মরা হাতির দাম লাখ টাকা!’ সন্ধ্যার আগে বিশালাকার চারটি কাঠের চিতা সাজিয়ে তার উপর হতভাগ্য হাতিটির দেহাংশ চাপিয়ে তাতে আগুন দেওয়া হল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘন সাদা ধোঁয়ায় ভরে গেল চারপাশ। আমার দুগাল বেয়ে গড়িয়ে এল জল। বুঝতে পারলাম না এই জল দুঃখের না ধোঁয়ার জ্বালা! উপলব্ধি করলাম আমাদের মস্তিষ্ক অনেক সময় হৃদয়ের সব অনুভূতির সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনা। ধীর পায়ে সরে এলাম সেখান থেকে।
রাতের অন্ধকারে হুলাপার্টি চালাল ‘হাতি খেদাও’ কর্মসূচী।
হাতির শেষকৃত্য দেখতে দেখতে সময় কখন পেরিয়ে গেছে খেয়াল ছিলনা। ইতিমধ্যে পশ্চিম আকাশে গোধূলির শেষ আলো ছড়িয়ে অদৃশ্য হয়েছে বিষণ্ণ সূর্য্য। শালবনের মাথার উপর উঁকি দিয়েছে একফালি চাঁদ। আশেপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতে শুরু করেছে হাতি বেরানোর খবর। এই অবস্থায় জঙ্গল পেরিয়ে বাড়ি ফেরার ঝুঁকি নিলাম না। পাশের গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে থেকে যাওয়ার ঠিক করলাম। রাত্রি ৮টা নাগাদ আবার খবর পেলাম সেই হাতির পাল রাতের অন্ধকারে পাথরকুমকুমি গ্রামের সামনে মেদিনীপুর-লালগড় পিচরাস্তার উপর দিয়ে শালবনী ব্লকের ৯নং কাশীজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে হুলাপার্টি। বাইক নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম। পুলের উপর পৌঁছে দখি প্রায় তিরিশ জনের হুলাপার্টির দল মশাল ও টর্চ নিয়ে বাজি ফাটাতে ফাটাতে হাতির পালকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এইকারণে ঐসময় লালগড় -মেদিনীপুর রুটে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি এলাকার কয়েকশ উৎসাহী মানুষ হাতি দেখতে পিচরাস্তার উপর ভীড় জমায়। হাতির পালটিতে একদম ছোট বাচ্চা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক বিভিন্ন বয়সের হাতি রয়েছে। বিস্তীর্ণ ধানজমির উপর দিয়ে হাতির পালটি যাওয়ার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু আসল কথা হল এভাবে হাতিদের এদিক সেদিক ছুটিয়ে লাভের লাভ কি হচ্ছে? কারণ হাতিরা এখন সারারাত ধানজমিতে ঘুরে বেড়ালেও শেষরাতে আবার তারা জঙ্গলে ফিরে আসবেই। এমন তো কোনদিন হবেনা যে গ্রামবাসীরা সকালে দেখবে যে হাতির পাল সুবোধ গরু ছাগলের মতো ধানজমিতে চরে বেড়াচ্ছে! সুতরাং, এতকিছুর পরেও ফলাফল সেই শূন্য। ফলে এই ধরনের পরিকল্পনাহীন হাতি তাড়ানোর ব্যাপারটা নিছক পণ্ডশ্রম আর এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বই কমবেনা! তবে স্বস্তির কথা এদিন হাতির গায়ে জ্বলন্ত মশাল ছুঁড়ে তাদের আঘাত করার কোনও ঘটনা ঘটেনি।
midnapore.in