নিবেদিতা মুখার্জী মজুমদারের জন্ম ঘাটাল শহরে। পিতা স্বর্গীয় গোপেশ্বর মুখোপাধ্যায়, মা স্বর্গীয়া জয়ন্তী মুখোপাধ্যায়। পড়াশোনা চলাকালীনই তাকে সংসারের ভার নিতে হয় এবং শুরু করেন চাকুরীজীবন।
স্বামী প্রণবানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯৩ সাল থেকে ঘাটাল শহরে নিবেদিতা তার সেবাকাজ শুরু করেন। ঘাটাল কোর্ট সংলগ্ন পাড়া এবং বস্তিগুলির প্রান্তিক মানুষদের সন্তানদের শিক্ষা প্রদান এবং তাদের সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসাই ছিল তার লক্ষ্য। তারপর তিনি ২০০২ সালে চাকুরীসুত্রে বদলী হয়ে আসেন মেদিনীপুর শহরে। এবং ২০০৩ সালেই আবার নতুন ভাবে শুরু করেন সেই সেবাকাজ যা তিনি ঘাটালে দীর্ঘদিন ধরে করে গেছেন।
এই দীর্ঘ সতেরো বছরে মেদিনীপুরের ঝর্নাডাঙ্গা বস্তি এবং নিবেদিতা পল্লীর প্রায় শতাধিক শিশু প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং কলেজ স্তরের শিক্ষা তার উদ্যোগে এবং সাহায্যে সম্পূর্ণ করতে পেরেছে। বহু শিশুশ্রমিক কেও তিনি শিক্ষার মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। শিক্ষাবিস্তার ছাড়াও তিনি এই দুটি জায়গার ছাত্রছাত্রীদের নানান সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং এখনও করছেন।
আজ প্রায় পঞ্চাশটির মতন ছাত্র ছাত্রীর সমস্ত শিক্ষার দায়িত্ব তার। সেই সাথে তাদের মা দের কে নিয়ে তিনি গঠন করেছেন মাতৃমন্ডলী যেখানে তাদের মধ্যেও শিক্ষা বিস্তার থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের নিরলস চেষ্টা তিনি করে চলেছেন।
শিশু শ্রেণী থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর অবধি ছড়িয়ে রয়েছে তার ছাত্র ছাত্রীরা। তাদের শিক্ষার্থে দশজন শিক্ষক শিক্ষিকা নিযুক্ত করেছেন তিনি। সেই সাথে নাচ আঁকা সহ অন্যান্য শিল্পমাধ্যমের শিক্ষার জন্যও নিযুক্ত করেছেন শিক্ষক। খুব সম্প্রতি তার ছাত্র রবি দাস, যার পরিবার একসময় কীর্তনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত আজ স্নাতকোত্তরে উত্তীর্ণ হয়েছে প্রথম শ্রেণীতে এবং বর্তমানে বি এড পাঠরত।
এবং এই বিরাট কর্মকান্ড নিবেদিতা করে চলেছেন কোনরকম সরকারী বা বেসরকারী সংস্থার সাহায্য ছাড়াই। মূলত তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং কিছু সহৃদয় মানুষের কায়িক এবং আর্থনৈতিক সাহায্যের মাধ্যমে। বিভিন্ন সময়ে তাকে এই উদ্যোগ রূপায়িত সাহায্য করেছেন আল্পনা ভট্টাচার্য, রুবি দাস বর্মণ, চৈতালী দাস বর্মণ এবং সবিতা নাগ।
আগামী দিনে নিবেদিতার লক্ষ্য সমগ্র মেদিনীপুর শহরের আর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল, সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের আর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা।
যদি কেউ তাঁর এই মহৎ কর্মকান্ডে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চান, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
অরিন্দম ভৌমিক।
midnapore.in
● Bengali part of the certificate in writter by - Purna Chandra Bhunia.
● Hindi part of the certificate in writter by - Priti Rekha Samanta.