মেদিনীপুরে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
Bankim Chandra in Medinipur | मेदिनीपुर में बंकिमचन्द्र
অরিন্দম ভৌমিক।
(১২ আষাঢ় ১২৪৫ - ২৬ চৈত্র ১৩০০ বঙ্গাব্দ)
(২৬ জুন ১৮৩৮ - ৮ এপ্রিল ১৮৯৪)
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ২৬ জুন (১২ আষাঢ় ১২৪৫ বঙ্গাব্দ) বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নৈহাটি শহরের কাছে কাঁঠালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পূর্বপুরুষের আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলার দেশমুখো গ্রামে। বঙ্কিমচন্দ্রের প্রপিতামহ রামহরি চট্টোপাধ্যায় মাতামহের সম্পত্তি পেয়ে কাঁঠালপাড়া গ্রামে আসেন এবং পাকাপাকি ভাবে থেকে যান। রামহরির পৌত্র যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র বঙ্কিমচন্দ্র,মাতা দুর্গাসুন্দরী দেবী। বঙ্কিমের আগে শ্যামাচরণ ও সঞ্জীবচন্দ্র নামে তাঁর আরও দুই পুত্রের জন্ম হয়। বঙ্কিমের পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৬ সালে মেদিনীপুর কালেক্টরের অধীনে খাজাঞ্চির চাকুরী গ্রহণ করেন এবং ১৮৩৮ সালে পদোন্নতির জন্য ডেপুটি কালেক্টরের পদ লাভ করেন। ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি এই জেলার মেদিনীপুর (শহর), হিজলী এবং অন্যান্য বহু স্থানে সরকারী জমি বিলি বন্দোবস্তের কাজে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ঐ সময় প্রজা সাধারণের পানীয় জলের কষ্ট দূর করার জন্য বহু জনহিতকর কাজ করেছিলেন। এই কাজ করার সময়ে তিঁনি কাঁথি মহকুমার খেজুরীতে এমনকি দুর্গম বনের মধ্যে বাঘের মুখে পড়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে লোকজনের চিৎকারে বাঘের আক্রমণ থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন।
স্বর্গীয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (যৌবনে)।
স্বর্গীয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবন-চরিত গ্রন্থে শ্রী শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন - "পঞ্চম বৎসর বয়সে মেদিনীপুরে বঙ্কিমচন্দ্রের 'হাতে খড়ি' হয়। তার কিছুকাল পরে বঙ্কিমচন্দ্রকে জননীর সঙ্গে কাঁঠালপাড়ায় আসিতে হয়”। শিশু বয়সেই তার অসামান্য মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। বঙ্কিমের কণিষ্ঠ সহোদর পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “শুনিয়াছি বঙ্কিমচন্দ্র একদিনে বাংলা বর্ণমালা আয়ত্ত করিয়াছিলেন।” যদিও গ্রামের পাঠশালায় বঙ্কিম কোনওদিনই যান নি। পাঠশালার গুরুমশাই রামপ্রাণ সরকার বাড়িতে তার গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। বঙ্কিমচন্দ্রের রচনা থেকে অনুমান করা যায় যে তিনি রামপ্রাণের শিক্ষা ব্যাবস্থায় খুব একটা খুশি ছিলেন না। তিনি লিখেছেন, “সৌভাগ্যক্রমে আমরা আট দশ মাসে এই মহাত্মার হস্ত হইতে মুক্তিলাভ করিয়া মেদিনীপুর গেলাম।”