ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)

মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)

অরিন্দম ভৌমিক ।

আমাদের পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলের একটি জনপ্রিয় সুস্বাদু মাছ "দইচাকা"। আপনারা সবাই হয়ত মাছটির কথা জানেন না, কারণ জেলে ভাইদের জালে পর্যাপ্ত পরিমানে এই মাছ ধরা পড়ে না। যতটুকু ধরা পড়ে তা দিঘা-রামনগর অঞ্চলেই বিক্রি হয়ে যায়। "দইচাকা" নামটি কিন্তু শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরেই প্রচলিত। মেদিনীপুরের বাইরে কেউ এই নাম জানে না।

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
দইচাকা মাছ (ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ) ভাজার প্রস্তুতি। ছবি ও ডেকোরেশনঃ অরিন্দম ভৌমিক।

এখন আমরা দেখে নেব ভারতের অন্যান্য সমুদ্র উপকূলে এই মাছের কি নাম - গুজরাটিতে বলা হয় চাঁদ (ચાઁદ, Chand), মারাঠিরাও বলেন চাঁদ (चाँद, Chand), তামিল'রা একে পেইনথি (Painthi, தீரட்டை, திரட்டை) ও থেরাট্টাই (Therattai, பைந்தீ, பய்ந்தி) এই দুই নামে চেনেন। আবার তেলেগুদের কাছে এই মাছ থোঠা/থেট্টি (తెట్టి, Thotha, Thetti) নামে পরিচিত।


মৎস প্রিয় বাঙালিরা কিন্তু আরো একটি সমুদ্র উপকূলে থাকে, তা হল বাংলাদেশের উপকূল। সেখানেও পাওয়া যায় আমাদের "দইচাকা" কিন্তু অন্য নামে। বাংলাদেশে এর নাম "পান মাছ"। মালয়েশিয়াতে বলা হয় 'টুডুং পেরিউক' (Tudung Periuk) এবং হং-কং-এ এর নাম 'কাও জি' (Cao Xi) এছাড়াও আমাদের এই "দইচাকা"-র বিভিন্ন দেশে অনেক নাম রয়েছে। যেমন - ব্যাটফিশ, বাটারফিশ, কনসেরটিনা ফিশ, ড্রেপানে, জেট্টো, মুনফিশ, পেপারকর্ন, সিলভার মুনফিশ, স্পটেড ব্যাটফিশ, স্পটেড ড্রেপানে, স্পটেড মুনফিশ, স্পটেড সিকল, স্পটেড স্প্যাডেফিশ ইত্যাদি।


শুধুমাত্র মলয় ভাষাতেই আমি দইচাকার ১২ টি নাম পেয়েছি77 - আগুং-আগুং (Agung-agung), বাহারু-বাহারু (Baharu-baharu), বেবারু (Bebaru), বেরবাহারু (Berbaharu), বানু (Buna), ডাউন বাহারু (Daun Baharu), ডাউন বারু বিনটিক (Daun Baru Bintik), পালিং (Paling), সাপি-সাপি (Sapi-sapi), সাপিহ-সাপিহ (Sapih-sapih), সাপিহি (Sapihi), তেলিঙ্গা গাজাহ (Telinga Gajah)

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
জাভা'র (ইন্দোনেশিয়া) পালাবুহানরাতু শহরের একটি মাছ বাজারে দইচাকা মাছ (Source: Lord Mountbatten / Wikimedia Commons. License: CC BY Attribution-ShareAlike)।

আমাদের এই "দইচাকা" আসলে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়ায়র স্থানীয় সামুদ্রিক মাছ। মাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম "ড্রেপানে পুংটাটা" (Drepane punctata), সর্বাধিক প্রচলিত নামটি হল "স্পটেড সিকলফিশ" (Spotted Sicklefish)। সাধারণত ভারত থেকে উত্তর অস্ট্রেলিয়া, নিউ গিনি, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান ও জাপানে পাওয়া যায়। ওড়িশার চিল্কা হ্রদে প্রচুর পরিমানে এই মাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের গোদাবরী মোহনায় ভালোই পাওয়া যায়।


স্পটেড সিকলফিশ সাধারণত সমুদ্রের নিচের কাদা ও বালিযুক্ত অঞ্চল ছাড়াও প্রবাল অঞ্চল, পাথুরে অঞ্চল, মোহনা, খাঁড়ি ইত্যাদি অঞ্চলে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত অমেরুদণ্ডী প্রাণী ও সমুদ্রের একদম তলদেশের মাছ (benthic fish) খায়। দইচাকা লম্বায় ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।


দইচাকার দেহ ডিম্বাকৃতি এবং দৃঢ়ভাবে গঠিত। উচ্চ প্রসারণযোগ্য মুখ যা প্রসারিত হওয়ার সময় নিম্নমুখী নলের মত আকৃতি তৈরি করে। বৃত্তাকার ও ভোঁতা ধরণের কীলক আকৃতির লম্বা পাখনা। লম্বা ফ্যালসিফর্ম পেক্টোরাল পাখনা (দুই দিকের পাখনা) এবং সামনের হাড়ের হাইপারোস্টোসিসের78 ফলস্বরূপ বড়-বয়স্ক মাছের আন্তঃখণ্ড অঞ্চলে একটি গলদ বা অস্থির গিঁট লক্ষ করা যায়। মাথার উপরে শেষ প্রান্তে অবস্থিত বড় চোখ। দুইদিকের পাখার (pectoral fins) গোড়ার ঠিক উপরে একটি বড় কমলা স্পট দেখতে পাবেন।

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ (ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ) | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)। ছবি ও বর্ণনাঃ অরিন্দম ভৌমিক।

মাছটির মোট ৮ থেকে ১০ টি ডোরসাল স্পাইন75 (Dorsal spine), মোট ২০ থেকে ২২ টি ডোরসাল সফ্ট রে (Dorsal soft rays), ৩ টি এনাল স্পাইন এবং ১৭ টি থেকে ১৯ টি এনাল সফ্ট রে রয়েছে। দেহের রং সাধারণত রুপোলি এবং উপরের অংশ হালকা সবুজাভ। দইচাকা'র পিক্টোরাল ফিনগুলি লম্বা ও সুচলো। অনেকটা ড্রেপানে লঙ্গিমন76 (D. Longimana) -এর মতোই, কিন্তু দইচাকা'র দুইদিকের উপরের অংশে ৪ থেকে ১১ টি করে উল্লম্ব ধূসর দাগের রেখা রয়েছে।


এই নিরীহ মাছটি একা বা ছোটদলে ঘুরে বেড়ায় এবং সমুদ্রতল থেকে ভেসে আসা খাদ্য খেতে থাকে। বড়শি দিয়ে এই মাছ ধরতে সমুদ্রের বিভিন্ন পোকা এবং চিংড়ির মাংস বেশ ভাল কাজ করে, তবে দইচাকার মুখ ছোট হওয়ায় হুকের আকার খুব বড় হওয়া উচিত নয়। এরা গোটা চিংড়ি দিলেও খায়, কিন্তু একটু সময় লাগে।


দইচাকা বড়শির টোপ খেতে এলে উপর থেকে মনে হবে কোন ছোট মাছ এসেছে। সময়মত টানলেই এই মাছ বড়শিতে তোলা সম্ভব। তবে দিঘা অঞ্চলে এই মাছ জালেই ধরা হয়। সাধারণত দইচাকা ৩০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের হয় কিন্তু এর থেকে অনেক বড় মাছও পাওয়া যায়।

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ (ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ) | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)। ছবিঃ অরিন্দম ভৌমিক।

২০০১ সালের ১২ ই জুন, স্যান্ডি ক্রিকে'র (Sandy Creek, Mackay, Queensland, Australia) রবার্টস নোয়েল ২.৩৫০ কেজি ওজনের দইচাকা ধরেন। সবথেকে বড় দইচাকা ধরা পড়ে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গিতে (Changi, Singapore), ওজন ছিল 9 কেজি।

দইচাকা নিয়মিত মিঠা জল এবং সমুদ্রের মধ্যে যাতায়েত করে, কিন্তু প্রজননের জন্য নয়। ঠিক যেমনটা anadromous এবং catadromous79 প্রজাতির মাছেরা করে। এরা ডায়াড্রোমাসের80 উপ-বিভাগ। এরা চক্রাকারে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি অঞ্চলে ঘুরে (অভিপ্রয়াণ/Migration) বেড়ায়।

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
নুন, হলুদ ও লঙ্কা মাখিয়ে সাধারণ ভাবে ভাজা দইচাকা মাছ। ছবি, রান্না ও ডেকোরেশনঃ অরিন্দম ভৌমিক।

অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের মতোই স্বাদযুক্ত মাছটি ভালোভাবে রাঁধতে পারলে বেশ সুস্বাদু লাগে। অনেক শহরের রেস্তোরাতেও এই মাছ পরিবেশন করা হয়। বাড়িতে আপনি নুন, হলুদ ও লঙ্কা মাখিয়ে দইচাকা'র ভাজা খেতে পারেন, কিন্তু আমার পছন্দ "দইচাকা কাবাব" ও "দই-দইচাকা"। দুটোরই রেসিপি দিলাম।

দই দিয়ে দইচাকা।

উপকরণ

৫০০ গ্রাম দইচাকা মাছ, ৩/৪ কাপ দই, ২ টো পেঁয়াজ, ৬ টি কাঁচা লঙ্কা, ৮ কোয়া রসুন, ১ চামচ অদা পেস্ট, ১ চামচ হলুদ, ২ চামচ জিরা গুঁড়ো, ১ চামচ ধোনে গুঁড়ো, ২ চামচ লঙ্কা গুঁড়ো, ১ চামচ গরম মসলা গুঁড়ো, ১ চামচ কালোজিরা গুঁড়ো, ১ টি তেজ পাতা, ৩ টি লবঙ্গ, ২ টি এলাচ, সরষে তেল, নুন।

পদ্ধতি

মাছে হলুদ, লঙ্কা ও নুন মাখিয়ে ৩০ মিনিট মেরিনেট করে নিন। এরপর হালকা আঁচে মাছগুলি ভেজে নিন। গ্রাইন্ডারে অল্প জল দিয়ে পেঁয়াজ, অদা ও রসুন পেস্ট করে নিন। এবার একটি কড়াইতে ২ চামচ তেলে লবঙ্গ, এলাচ ও তেজ পাতা দিন, সঙ্গে পেঁয়াজ, অদা ও রসুন পেস্ট দিয়ে ২০ মিনিট রাখুন যতক্ষণ না কাঁচা গন্ধ যায়। এরপরে বাকি সমস্ত মসলা (হলুদ, জিরা, লঙ্কা, ধোনে, গরম মসলা, গোলমরিচ) দিয়ে আরো ৫ মিনিট রাঁধুন। ৫ মিনিট পরে ১ কাপ জল দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবারে দই ও নুন মিশিয়ে একটু ফুটিয়ে আবার হালকা আঁচে ১০ মিনিট রাখুন। ভাজা মাছগুলি দিয়ে আরো ৫ মিনিট রাখলেই রান্না শেষ।

দই-দইচাকা রেডি।

ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
দইচাকা মাছের কাবাব। রান্না ও ছবিঃ অরিন্দম ভৌমিক।

দইচাকা কাবাব।

উপকরণ

১/২ কেজি দইচাকা মাছ, ১ চামচ গোটা জিরা, ৮ টি গোটা শুকনো লাল লঙ্কা, ১ চামচ গোটা ধোনে, ১ চামচ বেসন, ২ চামচ গরম মসলা গুঁড়ো, ১ চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১/২ চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, নুন, ১ টি ডিম, ১ চামচ অদা-রসুন পেস্ট।

পদ্ধতি

একটি কড়াইতে কম আঁচে গোটা জিরা, গোটা ধোনে, গোটা লাল লঙ্কা ভাজুন যতক্ষণ না গন্ধ বের হয়। বেসনটাও একইভাবে কম আঁচে বাদামি না হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন। এবারে ভাজা জিরা-ধোনে-লঙ্কা-বেসন সহ গরম মসলা, লঙ্কা গুঁড়ো গোলমরিচ গুঁড়ো একটি গ্রাইন্ডারে ভালো করে গুঁড়ো করে নিলেই কাবাব মসলা তৈরী। এখন ঐ মাছগুলির (ছোট পিস করে নিতে পারেন) মধ্যে ১ টি ডিম, অদা-রসুন পেস্ট এবং কাবাব মসলা গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে মেখে ৩০ মিনিটের জন্য মেরিনেট করুন। একটি কড়াইতে তেল গরম করে মাছগুলি উল্টে-পাল্টে ভেজে (deep fry) নিন।

ব্যাস, আপনার দইচাকা কাবাব রেডি।


অরিন্দম ভৌমিক ।

midnapore.in

[Published on 16.07.2020 - বাংলা ভাষায়, 'দইচাকা (ড্রেপানে পুংটাটা/স্পটেড সিকলফিশ)' মাছ নিয়ে লেখা প্রথম তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধ। Most informative article about Doichaka (Drepane Punctata / Spotted Sicklefish) fish as on 16.07.2020]
75 থোরাকিক মেরুদণ্ড মেরুদণ্ডের কেন্দ্রীয় অংশ, এটি ডোরসাল মেরুদণ্ড হিসাবেও পরিচিত, যা ঘাড়ের গোড়া থেকে আপনার পাঁজরের খাঁচার নীচে চলে।
76 ড্রেপানে লঙ্গিমন, সাধারণতঃ কনসার্টিনা ফিশ বা ব্যান্ডেড সিকলফিশ নামে পরিচিত, এটি ইন্দো-প্যাসিফিক এবং উত্তর অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত একটি মাছ।
77 Native to - Indonesia, Malaysia, East Timor, Brunei, Singapore, Christmas Island, Cocos (Keeling) Islands.
78 Hyperostosis occurs in about eighty species of fishes across at least six orders and twenty families.Bone sites that are affected and how they grow appear to be fairly consistent within a species. The hump on the head of an adult Snapper develops as a result of hyperostosis.
79 Anadromous - (of a fish such as the salmon) migrating up rivers from the sea to spawn./ Catadromous - (of a fish such as the eel) migrating down rivers to the sea to spawn.
80 Diadromous is a general category describing fish that spend portions of their life cycles partially in fresh water and partially in salt water. These represent both anadromous and catadromous fish. Anadromous fishes spend most of their adult lives at sea, but return to fresh water to spawn.
এই মাছগুলো এনে দেওয়ার জন্য জ্যোতির্ময় খাটুয়া'কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই ।
ড্রেপানে পুংটাটা, স্পটেড সিকলফিশ, মেদিনীপুরের দইচাকা মাছ | Spotted Sicklefish (Drepane punctata)
দইচাকা মাছ হাতে অরিন্দম ভৌমিক। ছবিঃ অরিন ভৌমিক।

তথ্যসূত্র

fishbase (Luna, Susan M. and Valdestamon, Roxanne Rei)
● BdFISH Feature (Editor: ABM Mohsin and Shams Muhammad Galib)
● Fishes of Australia (by Museums Victoria on behalf of the OzFishNet community.)
● Wikimedia Commons (Lord Mountbatten).
● Maugé, L.A., 1984. Drepanidae. In W. Fischer and G. Bianchi (eds.)
● Drepane punctata on Wikipedia
● Handlinefishing Dot Com
● FAO species identification sheets for fishery purposes. Western Indian Ocean fishing area 51. Vol. 2. (Ref. 7338)
● Froese, R. and D. Pauly. Editors. 2013. FishBase. World Wide Web electronic publication.; http://www.fishbase.org/Country/CountrySpeciesSummary.php?c_code=356&id=454, version (12/2013).
● India Biodiversity Portal
● The Web Site of Everything Dot Com
● FishBase. Retrieved November 28, 2016, from http://www.fishbase.org
● Marine Fishes Identification, Department of Fisheries Malaysia. Department of Fisheries Malaysia. Retrieved May 24, 2017, from http://www.dof.gov.my/
● World Register of Marine Species (WoRMS). Retrieved February 07, 2017, from http://www.marinespecies.org
● Huda MS and Haque ME. 2003. Field Guide to Finfishes of Sundarban, Aquatic Resource Division, Sundarban, Sundarban Biodiversity COnservation Project, Bangladesh Forest Department, Khulna, Bangladesh, p. 148.
● Linnaeus C. 1758. Systema Naturae, Ed. X. (Systema naturae per regna tria naturae, secundum classes, ordines, genera, species, cum characteribus, differentiis, synonymis, locis. Tomus I. Editio decima, reformata.) Holmiae. Systema Naturae, Ed. X. v. 1: i-ii + 1-824.
● Rahman AKA. 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 375-376.
● Talwar PK and Jhingran AG. 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. 2, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, p. 874.
● Bio-Bulletin, Vol. 1 (May 2015). Copyright School of Biological Sciences, Universiti Sains Malaysia, Malaysia. — [Magazine/Bulletin]
● Ambak, M.A., Mansor, M.I., Zakaria, M.Z. & Mazlan, A.G. (2010). Fishes of Malaysia. Penerbit UMT, Universiti Malaysia Terengganu, Malaysia. pp. 334.
● Chin, P.K. (1998). Marine Food Fishes and Fisheries of Sabah. Natural History Publications, Kota Kinabalu, Malaysia. pp. 280.
● Yusri, A., Hamdan, J. & Abdul Rahman, A.M. (2010). Ikan Laut Malaysia: Glosari Nama Sahih Spesis Ikan . Dewan Bahasa dan Pustaka, Kuala Lumpur, Malaysia. pp. 290.
● Kimura, S., Satapoomin, U. & Matsuura, K. (2009). Fishes of Andaman Sea : West Coast of Southern Thailand. National Museum of Nature and Science, Japan. pp. 346.
● Yoshida, T, Motomura, H, Musikasinthorn, P & Matsuura, K. (2013). Fishes of Northern Gulf of Thailand, Volume 8. National Museum of Nature and Science,Tsukuba. Research Institute for Humanity and Nature,Kyoto. Kagoshima University Museum, Kagoshima., Japan. pp. 239.
● Matsunuma, M., Motomura, H., Matsuura, K., Shazili, N.A.M. & Ambak, M.A. (2011). Fishes of Terengganu: East Coast of Malay Peninsula, Malaysia. National Museum of Nature and Science, Universiti Malaysia Terengganu and Kagoshima Universiti Museum, Malaysia. pp. ix+251.
● Yean Pong, Lui, Phaik Ean, Chee & Yeap, T.S. (1994). Major Commercial Marine Fishes of Malaysia. Department of Fisheries Malaysia, Malaysia. pp. 113.