শম্ভু রক্ষিত , Sambhu Rakshit, सम्भू रक्षित, poet, Mahaprithibi, Hungryalist movement, BLUES

শম্ভু রক্ষিতে'র কবিতা | Poems by Sambhu Rakshit

(16 August 1948 – 29 May 2020)

বিরিঞ্চিবেড়িয়া, পূর্বশ্রীকৃষ্ণপুর, পূর্বমেদিনীপূর ৭২১৬৩৫

মুক্তিবাদ


যারা আমাকে ডিগডিগে

আমার রুহকে যুদ্ধের হিরো

আমার ঈশ্বরকে অনিষ্টজনক

আমার কবিতাকে

চাকচিক্যময় আভিজাত্য বা বিক্ষিপ্ত প্রলাপ মনে করে


আহ ভাইরে

তারা বাণিজ্যের অযথার্থ ক্ষমতা দিয়ে

তাদের নাক কান মুখ দখল করে

এই শক্তিশালী প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্রের

অস্তিত্ব রক্ষা করুক


যারা বালি ফুঁড়ে

আমাকে বাল্যপাঠ শেখাচ্ছে

আহ ভাইরে

তারা মেকি সুন্দরের মিথ্যে সীমারেখা প্রত্যাখ্যান করে

অন্তত একটা ছোটোখাটো দেবদূতের সন্ধান করুক


অকেজো জ্যুকবক্সে স্হির ডিস্ক

জীবনের আর ভাঙা ইঁটের

অশুভ যুদ্ধপরায়ণ যন্ত্রণায় আন্তর্জাতিক কোরাস

আহ ভাইরে


কবরখানা আর সুড়ঙ্গের মধ্যে গুঞ্জন-করা

আস্তাবলের ধূর্ত পিটপিটে মায়া

মধ্যে মধ্যে ফ্যাঁকড়া

আহ ভাইরে


কাঁধে অগ্নিবর্ণের ক্যামেরা

হাতে অ্যান্টিএয়ারক্র্যাফ্ট ট্রানজিসটার

অন্য সম্রাটের দায় যাতে মেটে

মাংস ভেদ করে সচল ফ্রেস্কোর মতো

এই সব রেডিও-টিভি-অ্যাকটিভ যুবশক্তি

মুক্তিবাদ এবং জাঁকজমক খুঁড়ে নৈশ-স্তব্ধতা

আহ ভাইরে

গাঁয়ের চাষাভুষোরা আবার


প্রত্যেকটি পৃথ্বীর নিচে একটি করে পাহাড় গড় রয়েছে

এবং কবিতা কি ? গাঁয়ের চাষাভুষোরা জানে না,

তাদের যে যা বোঝায় আর কি !


তাদের সবল স্পর্ধার শক্তি এবং গুটিয়ে থাকা ফুসফুস

তাদের ছোট ধাইমার দূরবিন দিয়ে দেখা সৌজন্য

যা বলা যায় তাই করে ।


মহার্ঘ ঝুনঝুনি-নাড়া বৃক্ষের উপবাসী চোখ, শহরের সন্মুখভাগ

অতোটা বড়ো নয়

প্রকৃতির আঁচলপাতা কুশল

মিথুনজননীর স্পর্ধা

তাদের বাহুর ওপর দৌড়ে এসে উঠতে পারে—

ভিলাই সঙ্গীত, খেলনাপাতি করাত, চোঙা রেকর্ড, ফোনোগ্রাফ

এবার কি এদের সহযোগ করা যেতে পারে ?

ঘুটেগেড়িয়ার ওই ধাতু তৈরি হতে যে উপকরণ লাগে

সে সমস্তই এদের আত্মীয়বর্গের জানা হয়েছে

বাস্তবিক কাছেই বারুদ-ফাঁপা লোহার গোলার মধ্যে

এদের আত্মীয়বর্গ ব্রক্ষা গৃধ্নু ছুরি নিয়ে মহাযজ্ঞ সারছে ।

আর যাদের উদাসীনতা আজ দু’হাজার বর্গমাইলের খাদ্যসম্ভারের ওপরে

যাদের দাদামহাশয় কিংবা বড়োদাদা তাদের টিপ্পনীকার ও প্রযোজক

বা যারা ক্ষেপণাস্ত্রের পাথর তারামণ্ডলের কাছ থেকে

এনেছে বলে দাবি করছে

মজা, তাদের যৌবন পড়ে গেছে ।

মজা, গাঁয়ের চাষাভুষোরা আবার কবিতার মধ্যে

একটা প্রাকৃত জানোয়ার কুড়িয়ে পেয়েছে

মজা, তারা শহরের মঞ্জিলে এসে পড়লো

নষ্ট শোক

আমার অস্থির কাঁপা হাত দিয়ে যখন আমি তোমার হাড় মাংস তুস

পান করে আসি‚ স্বর্ণখনি উসকে জাদুর তুলার রাজ্য নিতে আসি

অনুভূতির তখন যেন স্বার্থহীন যাত্রা


হোভার ক্রাফট‚ মনোরেল চড়ে যখন আমি তোমাকে গোপন ও গ্রাস করি

পুরাণকাহিনী‚ মেধমূর্তি‚ অগ্নিসংঘর্ষ আমাকে রোশনি অভ্যর্থনা করতে চায়

এবং অফুরন্ত সুযোগ নিয়ে যখন আমি আকাশে বৃহৎ বেলুনের নকশা আঁকি

আমার দূরবিনে ভিন্ন দুই নেবুলামণ্ডল কাঁপে

তহরেকরকম জগৎ কে যেন বয়ে আনে


আমি জানি সবই জানি নাটক সঙ্গীত গুটিপোকা কখনো সুতোহীন

আমি প্রথম উঁচু হয়ে নীচে দৌড়ে যাই‚ আমি তোমার অস্তিত্ব চেপে ধরি


আমি বাতাস ধরে ঘূর্ণির ধারে তোমাকে প্রথম ঝুঁকে দেখি


আমি আণ্ডারগ্রাউণ্ড বা পুতুলের মিউজিয়ামে যখন খকখক করে উঠি

আমি স্থলের সম্রাট‚ ভূ-আলোড়নের চাপে পড়ে অস্ত্র-উৎপাদক

আমাকে উঠিয়ে নাও -


ধোঁয়া ধুলো কুণ্ডলী হয়ে ঘুরে সরু হয়ে নেমে আসে

পৃথিবী আমার মতো প্রতিষ্ঠিত কুৎসিত হয়ে যায়

প্রিয় ধ্বনির জন্য কান্না ২৭


হৃদরোগের সন্ধান নিয়ে ঢুকে পড়ো । সরবরাহকারী নির্মাণযন্ত্র

পৃথিবীর মেঘময় আতঙ্ক শেষপর্যন্ত আধার হিসেবে ।

উর্ধ্বময় সর্বনাশ ভেবে স্নায়ুতন্ত্রের কাজ । সুরক্ষিত জল

দহনক্রিয়া মাথার ধমনী ছিঁড়ে যাও, বোতল, বায়ুর কাঠিন্য অনুশীলন শরীর

অরণ্যসমগ্র, পাখিদের শ্রবণশক্তি, আঙুর সমস্যা সহজ নয়

উজ্বল মাথার পর্যবেক্ষণ ভেঙে অবসাদগ্রস্ত উচ্চগ্রামের অংশে

প্রমাণিত হই ; অন্ধ দৈবজ্ঞ, সৌরশক্তি, প্রশান্তি যেন আওয়াজ বিক্রি

টিন-ভর্তি কুয়াশা নিয়ে মানুষ-জীবজন্তুর মাথা হয়ে হাতজোড় করি

বসো গৌরবসূর্য, অদ্ভুত ভুত-প্রেত বিশ্বাস সে-বিষয়ে সচেতন

পৃথিবীর মেঘ, শিস, দৃষ্টিনির্ভর আস্বাদনের ফসল-রহস্যের মিশ্রণ চেতনা

অতুল ঘনরাশি ও উরসুলার কিয়দংশের লাল রং লেগে আছে দুর্যোগমথিত

এলাকায় ; তোমার কোনো অলৌকিক পরিক্রমা নেই । শুধু ফুলবাগিচার

ও জলবায়ু কুয়াশার অংশ লক্ষনীয়, সাড়া দাও, রূপকের মতো বিবরণ, দৈববাণী

সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়ে যায় ; শরীরের ভিতর বেশি, নিশ্চিত প্রমাণ এই

গবেষণাশক্তি, কেন না, এখানে এই উক্তি সত্যি স্বর্ণসূর্য হয় — আবিষ্কার

রং তুলি বিপদের হুঁশিয়ারি রূপকর্ম হয় ও যেন আদানপ্রদান

তোমার সহানুভূতিশীল হৃদয়টি আমার চাই


midnapore.in