শম্ভু রক্ষিত , Sambhu Rakshit, सम्भू रक्षित, poet, Mahaprithibi, Hungryalist movement, BLUES

শম্ভু রক্ষিতে'র কবিতা | Poems by Sambhu Rakshit

(16 August 1948 – 29 May 2020)

বিরিঞ্চিবেড়িয়া, পূর্বশ্রীকৃষ্ণপুর, পূর্বমেদিনীপূর ৭২১৬৩৫

মড়িঘর


তিনি নিজের তৈরি কৃত্রিম বিষাদের ওপর এলেন,দেখলেন;

এই শীতল উদ্যমের দেশ,তার যা-কিছু ধ্রুব দান সঙ্গে যুক্ত হল।


প্রেক্ষক এক সুন্দর বিশ্লেষন চালিয়ে পুনর্বার আলোর চারধারে ভেসে চলল

এই বিশেষ দেয়ালে ঝোলান অস্বস্তিময় কঙ্কালেরা যন্ত্রের ঢিপি,বসুন্ধরার শৈবাল


চারিদিকে তড়িৎক্ষেত্র;যৌক্তিক দেহ যাত্রা শেষ করে

আসবে।সলজ্জভাবে সে নানাজনকে বাধা দেবে;মায়াময় তার সৃষ্টির শক্তির

একটিকে গতিশীল সেই সন্ধান কায়াটির সঙ্গে বাঁধল।


আমি শৌখিন,বরতরফ।আমার চারধার অতিপ্রোন্নত

পাবক সন্ধান করে কারুকার্য করা

বিশেষ রঙিন শান্ত পা-যা প্রাকৃত কীর্তির তলায়

প্রায়ই নিস্বপ্ন করে দেখায় গন্ধ,অনেক শোয়ানো শরীর আকণ্ঠ উন্মুখ

পরিবর্তন অভ্যর্থনা সৃষ্টি করে আকাশরশ্মির মতো

তার দৃষ্টিতে এমন সমস্ত চিত্র

উর্ধাকাশের বায়ুমণ্ডলের ওপর তার পতি কেঁপে উঠেছেন।


তার নিটোল নরম চোখে অদ্ভুত অক্ষর রয়েছে।সমস্ত নক্ষত্র আকাশ

ও ভ্রূণ বের করা দাঁত প্রসক্ত,আক্রান্ত।

বস্তুত,যখন শরীর ওপর-নিচ হয়ে প্রীয়মাণ গহ্বরে

পরিবর্তিত হয়,চোখের তারা স্ফুলিঙ্গ হয়ে ছিটকোয়

তখন এসে দাঁড়ায় মেধাবিনী,সবাইকে কাঁপিয়ে দিয়ে যায়।


শস্যপ্রসূ বসুন্ধরা যার সামনে এসে অসাড় বোধ করলেন

তিনি স্পর্শ করা সৌন্দর্যের চাঁদ

তিনি চিৎ হয়ে,যেন আর তার কিছুই নেই-দেবী অদিতি তাকে

মাটি থেকে আকাশে তুললেন

এবং তার হৃদয় থেকে বেরুল উষার অবিশ্বাস্য-নিধি।


প্রেয়সী ঘরের একধারে এসে করলেন সহজব্রত

মাটিতে বসে সেই ছবি আঁকলেন,সমর্থ হলেন

সাজিয়ে দেওয়া সৌন্দর্যের ধারায় হংসযুগল

পুতুলের আকারের ওপর প্রাধান্য পেল

এবং সেই ভাস্কর্য রমণী,যিনি আমার জন্যে উদ্ভাবিত,তিনি এই হুবহু দেখলেন।

পাঠক, অক্ষরগুলি


আমি বেশ কয়েকটি অক্ষরকে নিয়ে

সোনালি নস্যি রঙের ফ্রককোট পরে

বিষুবরেখার কয়েক ডিগ্রি ওপরে উঠেছি


বিটকেল শিক্ষার্থীসুলভ তাদের হাত

আঁচড়ের সাহায্যে আমাকে এমন ব্যবহার করছে

এবং আমার ছ'মিটার চওড়া দোলনের ওপর

তারা এমন ভারি নম্র অন্তহীন খেলা খেলছে

যে তাদের ত্রস্ত শঙ্কিত ঐক্যবদ্ধ নীলবর্ণের গ্রীবার ওপর

কপনি তুলতে হয়েছে


তারা আমার অন্তর্হিত যুক্তির ধাপ দিয়ে

নৈঋত ছায়ার পরিধি থেকে এসে

লবণের বরফখণ্ডের ওপর


তারপর তারা আমার কায়াহীন হাতের ওপর


আমি কোনো বীভৎস মুহূর্তে অক্ষরগুলির বোঝাও নামিয়ে নিয়েছি

তাদের মধ্যে কোথাও সৃজনীশক্তি লুকিয়ে আছে কিনা দেখবার জন্যে


অতি সুস্বাদু মাছ দিয়ে তাদের করেছিও বাতাস


বস্তুত তাদের রূপসী হৃদয় রম্বস,বৃত্ত,সামন্তরিক গড়ন নিয়েছে


পাঠক,অক্ষরগুলি এলেমদার,উদ্যত এখন

একটু হেসে আমাকে ব্যাখ্যা করতে পারছে

অসম্ভব উৎস থেকে বেরিয়ে এসে

মন্থর আশ্বস্ত পায়ে

অগোচর লক্ষ্যে হারিয়ে যেতে পারছে

আমার শাশ্বতের মূল টেনে আনতে পারছে

প্রিয় ধ্বনির জন্য কান্না ১

তুমি ঈশ্বরকন্যা,তুমি আমাকে বিশুদ্ধ কবির জনক হতে সেদিন শেখালে

ব্যক্তিগত মৌলিক দৃশ্য থেকে ধূসর বিষয়ে আমি,ব্যক্ত অব্যক্তের

অবাস্তব মুহূর্তের স্বতন্ত্র আমি,আমার গভীরতর সাম্রাজ্যে

তুমি আছো,তুমি নেই

তোমার আশ্চর্য হবার মত বিশুদ্ধপ্রীতি,কৃত্রিম পদ্ধতিতে আকাশে

ওড়ার ব্যাপারে তুমি বয়সে প্রবীণ

তুমি ঈশ্বরকন্যা,অত মেহনত ও অর্থব্যয় পশু করে কেন ভেসে যাবে

যখন ধাবমান দিনে বস্তুপিণ্ড ও ধোয়াঁ-ঢাকা বরফ আবিষ্কার

তুষার ঝড়ে আমি নিজ-মর্ত্যসীমা চূর্ণ করে তোমারই জগতে প্রবেশ করেছি

সাদা অস্বচ্ছ ধোয়াঁ ও শৃগালের গুঞ্জরন নিয়ে

প্রলয়ের আকর্ষণীয় স্বচ্ছ পর্দার মত আন্দোলিত তরঙ্গে চলে গিয়ে

অন্য অনেক স্বপ্ন ভুলে তোমাকেই ভেবেছি

তুমি বৃত্তাকারে ঘুরে ঘুরে এসেছো আপাত-অবাস্তব রং যেমন ঘুরে ঘুরে আসে

তুমি দুরত্বের ধারণা থেকে অতিনিপুনভাবে কখনো এসো না আর

আমি কি বয়সে নবীন?

আমি স্বেচ্ছাচারী


এইসব নারকেল পাতার চিরুনিরা, পেছন ফিরলে, এরাও ভয় দেখায় ।

কিছুই, এক মিনিট, কিছুই জানি না, সাম্যবাদী পার্লামেন্টে জনশ্রুতি সম্পর্কে বা ।

চণ্ডাল কুকুরদের আর্তনাদ আমাকে ঘিরে– এবং আমাকে আলবৎ জানতে হবে, আলবৎ আমাকে

ডুবতে দিতে হবে, যেতে দিতে হবে যেখানে যেতে চাই না, পায়চারি করতে দিতে হবে ।

আমার গলা পরিষ্কার — আমি স্বেচ্ছাচারী – কাঁচের ফেনার মধ্যে চুল — স্পষ্ট করে কথা বলতে দিতে হবে

আর কথাবার্তায় তেমন যদি না জমাতে পারি সেরেফ

পায়চারি করে ঘুরে বেড়াবো — সমস্ত পৃথিবীর মেঘলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে ।

ক্রোধ ও কান্নার পর স্নান সেরে । ঘামের জল ধুয়ে — শুদ্ধভাবে আমি সেলাম আলয়কুম জানিয়ে

পায়চারি করে ঘুরে বেড়াবো ১ থেকে ২ থেকে ৩, ৪, ৫ গাছের পাতার মতো । রিরংসায় ।

মাটিতে অব্যর্থ ফাঁদ পেতে রেখে । রাস্তায় । ব্রিজের ফ্ল্যাটে । ট্রেনে,

যে কোনো কিশোরীর দেহে । শেষ রাতে — পৃথিবীর মানচিত্র এঁকে, কেবল স্হলভাগের

হু হু করে জেটপ্লেনে আমি যেতে চাই যেখানে যাবো না, এর ভেতর দিয়ে

ওর ভেতর দিয়ে — আর । হুম । একধরনের ছেনি-শাবল আমার চাই–

যা কিছুটা অন্যরকম, রবীন্দ্রনাথ বা জীবনানন্দের নয় — ঠিক

খেলার মাঠে স্টার্টারের পিস্তলের মতো — রেডি — আমি বাঘের মতন লাফিয়ে পড়ব । খবরদার ।


midnapore.in