আজ নিয়ে পাঁচ দিন তোমার কথা লিখতে লিখতে, মনে হচ্ছে তোমার সাথে বোধহয় গল্প ই করছি তোমার প্রিয় একেবারে সাদামাটা চারিদিকে ব ই রাখার পুরোনো দিনের কাঠের আলমারি তার মাঝে কোনো কোনটা আবার ভাঙা, আমাদের বাড়ির একেবারে সামনের সদর ঘরের ছোট তক্তপোষটায়। ঐ তক্তপোষটার চারিদিকে বই রাখা থাকতো। কতোবার বলেছি গুছিয়ে দিই !! বারবার বলেছো গায়ে ব ই এর ছোঁয়া না লাগলে তোমার ঘুম আসে না! এখন অনেক জায়গায় গিয়ে যখন সব সাজানো গোছানো লাইব্রেরী দেখি , তোমার মুখ টা চোখের সামনে ভেসে ওঠে! কোনো দিন একটা গোছানো সুন্দর ব ই রাখার ঘর তুমি পাও নি! কোনো দিন তোমাকে গদি দেওয়া খাটে শুতে দেখিনি ! বলতে ঐ বিছানায় তোমার ঘুম আসে না ! সত্যি কারের ত্যাগ তোমার কাছ থেকেই শিখেছি, বুঝেছি। কি অবলীলায় সব রকমের মানুষের সাথে মিশে যেতে তুমি! সেই সময়ে জাত পাতের বিচার যখন প্রবল তোমার কাছে উঁচু নিচু জাতি কোনো প্রভেদ ছিল না। একদিন তুমি ই গল্প করেছিলে , চন্দ্র কোণায় কারোর বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে তোমাকে নিমন্ত্রণ করা হলে, তোমাকে খেতে দেওয়া হতো আলাদা করে পরে। কোনো উঁচু জাতির লোকেদের সাথে এক পঙক্তিতে বসে খাবার অধিকার তোমার ছিল না,!! তোমার আধুনিক মন সমাজ মেনে নেয় নি। তবে এখন দেখি চারিদিকে তোমার স্বপ্নের জয় হয়েছে। এই জন্য ই তুমি যুগ পুরুষ আমার কাছে। একবার রবি ঠাকুরের "চন্ডালিকা" নৃত্য নাট্য বোঝানোর সময় প্রকৃতি , আনন্দ এই চরিত্র গুলো বোঝানোর সময় তুমি অনেক বলেছো এই কাহিনী ।ঐ যে গান টা " ওকে ছুঁয়েও না ছুঁয়েও না ছিঃ ও যে চন্ডালিনীর ঝি " যতোবারই গেয়েছিলাম তোমার ঐ ছুয়ো না উচ্চারণ টা কিছু তেই পছন্দ হচ্ছিল না! আসলে কি বলো তো, তুমি ঠিক যে ভাবনা নিয়ে বলতে বলছিলে সেটা শুধু উপলব্ধি করতেই আমার এ্যাতো বছর লেগে গেল! এবারে পূজোর সময় চন্দ্র কোণা গিয়েছিলাম। এখন অনেক সার্বজনীন পূজো হচ্ছে চারিদিকে। আগমনীর সুরে, আমি খুব আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম শুধু একটা কথা ভেবে, যে স্বপ্ন তুমি এ্যাতো বছর আগে দেখেছিলে তোমার সেই তারুণ্যের স্বপ্ন নিয়ে, চন্দ্র কোণায় ঠাকুর বাড়ি বাজারে টাউন ক্লাবে শুরু করেছিলে সার্বজনীন দূর্গোৎসব, এখন চন্দ্র কোণায় দিকে দিকে তোমার সেই স্বপ্ন ছড়িয়ে পড়েছে! সমাজ বদলের তোমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে অনেক টাই ! এই সমাজকে তোমাকে নিয়ে ভাবতে হবেই!
চন্দ্রকোনার মুকুটহীন সম্রাট শ্রী সত্য ঘোষাল এর স্মৃতিচারণায় দৌহিত্রী।
নূতন কিছু করার স্বপ্ন তোমাকে তাড়া করে বেড়িয়েছে সবদিন। এ্যাতো কর্ম চঞ্চল জীবনীশক্তি এক যুগ তপস্যা করলেও পাওয়া যাবে না। ম্যাগাজিন বা ব ই প্রকাশের ভাবনা তোমার ছাত্র জীবন থেকেই। মেদিনীপুর শহরে ' বিদ্যাসাগর হল ' উদ্বোধন করতে এসেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এখানে এসে স্বয়ং কবিগুরু কে দিয়ে তুমি তোমার ছোট্ট ম্যাগাজিনের নাম করণ করিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে তোমার ছাত্রজীবনে! ওনার নিজের হাতের লেখা য় এই কথা টা ই লেখা ছিল ..." তোমাদের এই ব ই টির নাম রাখতে পারো নবীনা "। নামকরণ টা তুমি মনে প্রাণে গ্রহণ করেছিলে । তোমার এই নবীন চিন্তা ধারা র নবীন মন তুমি কোনো দিন হারিয়ে যেতে দাও নি! "Truth " আর "Beauty" তোমার জীবনে একাকার হয়ে মিশে গেছে!